রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ প্রমাণের ব্যর্থতায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিনসহ চারজন। তবে এ মামলার অপর দুই আসামিকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। ঘটনার প্রায় নয় বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন হিযবুত তাহরীরের সদস্য সাইদুর রহমান ও তৌহিদুল আলম। রায়ে সাজার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
খালাসপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিন, যুগ্ম সমন্বয়ক কাজী মোরশেদুল হক ওরফে প্লাবন, হিযবুত তাহরীরের সদস্য তানভীর আহম্মেদ ও আবু ইউসুফ আলী। এ মামলায় অধ্যাপক মহিউদ্দিন, কাজী মোরশেদুল হক ও আবু ইউসুফ জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা। সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাইদুর ও তৌহিদুল এবং খালাসপ্রাপ্ত তানভীর পলাতক।
রায়ে বলা হয়, এ মামলায় আসামি সংখ্যা ছয়। তাদের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা করে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ বাকি চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের বেকসুর খালাস দেওয়া হলো।
রায়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বলা হয়, দুই আসামি গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে এ মামলার রায় কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদের পশ্চিম পাশে হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের কিছু সদস্য জড়ো হন। তাঁরা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা করে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন। উত্তরা থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে এবং তাঁদের কাছ থেকে সরকারবিরোধী লিফলেট, পেট্রলবোমা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে উত্তরা থানা-পুলিশ। ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তদন্ত শেষে হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১৬ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনকে উপস্থাপন করেছে।