হারিছ, আনিসের সাজা মওকুফের বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন তথ্যমন্ত্রীও
আলোচিত দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মওকুফের বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আল–জাজিরার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, আল–জাজিরার প্রতিবেদনে হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদকে পলাতক আসামি বলা হয়েছে। কিন্তু আজকে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁদের দুজনের সাজা মওকুফ করা হয়েছে ২০১৯ সালে।
তাঁদের কোন পদ্ধতিতে সাজা মওকুফ করা হয়েছে, তাঁরা কি আত্মসমর্পণ করেছিলেন? জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নন। একজনের সাজা মওকুফের বিষয়টি জানেন। তবে তাঁরা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনির এক আত্মীয়কে খুন করার অপরাধে, অর্থাৎ জাতির পিতার হত্যাকারীর সহযোগীকে হত্যা করার অপরাধে। খুনের সাজা মাফ করার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির আছে।
বাংলাদেশে বহুজনের খুনের সাজা মাফ করা হয়েছে। বিচার–বিশ্লেষণ করে রাষ্ট্রপতি এটি করেছেন। তাঁরাও বহু বছর সাজা খেটেছেন। সাজা খাটার পর কিন্তু একপর্যায়ে সাজা মওকুফও করা হয়। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কয়েদি সাজা খাটার পর যদি ভালো আচরণ করেন, তখন সাজা মওকুফ করা হয়।
বহুল আলোচিত দুই সহোদর হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মওকুফ করেছে সরকার। হারিছ দুটি এবং আনিস একটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ তাঁদের সাজা মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই। তাঁদের আরেক ভাই তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফও খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় কারামুক্ত হন তিনি।
জোসেফের সাজা মাফ করার জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁর মা রেনুজা বেগম। হারিছ ও আনিসের জন্য কে, কখন, কীভাবে আবেদন করেছেন, সে তথ্য এখনো পরিষ্কার হয়নি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তবে আল–জাজিরা যে প্রতিবেদন করেছে, তাতে শিরোনামের সঙ্গে রিপোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত আক্রোশবশত এই রিপোর্ট করা হয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশে আল–জাজিরার গ্রহণ যোগ্যতা কমেছে। আল–জাজিরার জন্য কষ্ট হচ্ছে যে এই রিপোর্টের জন্য তারা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম, কিন্তু আমরা করিনি। কারণ, আমরা গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।’ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আল–জাজিরার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।