হাওরে বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি সহ্য করা হবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে যাঁরাই অনিয়ম করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ শনিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এম এ মান্নান তাঁর নির্বাচনী এলাকা জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের নারিকেলতলা এলাকায় বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে জেলায় হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হলো। যদিও হাওরে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রকল্প নির্ধারণ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনসহ নানা কারণে বাঁধ নির্মাণের কাজ কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে বাঁধ নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘হাওর এলাকার সন্তান হিসেবে আমার কাজে স্বাভাবিকভাবেই হাওর প্রাধান্য পাবে। হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী সমাধান খুঁজতে হবে। আমরা কৃষকের মুখে সব সময় হাসি দেখতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরবান্ধব। কৃষকের মুখে হাসি ধরে রাখতে শেখ হাসিনার সরকার অতীতের মতো সব সময় হাওরের মানুষের পাশে থাকবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সুনামগঞ্জ জেলায় এবার ৩৭টি হাওরে ৫৫৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের কাজ হবে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩৭ কোটি টাকা। হাওরে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব হাওরে বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জেলায় এবার ২ লাখ ১৭ হাজার ৬১৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাওরে বোরো আবাদ এখন শেষ পর্যায়ে আছে।
এদিকে সুনামগঞ্জের সব হাওরে দ্রুত ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু ও গণশুনানির মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের দাবিতে আজ সুনামগঞ্জ শহরসহ উপজেলাগুলোতে একযোগে মানববন্ধন হয়েছে। স্থানীয় ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। হাওরে ২০১৭ সালে ব্যাপক ফসলহানির পর থেকে কৃষকদের পক্ষে বিভিন্ন দাবি নিয়ে সংগঠনটি সোচ্চার। আজ বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন হয়। একই সময় মানববন্ধন হয় জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।