স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক রোবেদ আমিনকে প্রতিহতের ঘোষণা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন একদল চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, নার্স, কর্মকর্তা–কর্মচারীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যরা উপস্থিত থাকলেও কথা বলেন শুধু চিকিৎসকেরা। এসব চিকিৎসক মূলত বিএনপি–সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে রোবেদ আমিনকে মহাপরিচালকের পদে রাখার চেষ্টা চলছে। তাঁরা স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক কমিটি পুনর্গঠন করার দাবি জানান।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রোবেদ আমিনকে মহাপরিচালকের পদে (চলতি দায়িত্বে) নিয়োগ দেয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বাধার মুখে রোবেদ আমিন অফিসে ঢুকতে পারেননি। তবে তাঁকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত দেখা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রোবেদ আমিনের অবস্থান ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে। তাঁকে কোনোভাবেই মহাপরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে মেনে নেওয়া যায় না।
ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জিয়াউল করিম বলেন, রোবেদ আমিন ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্টে সরকার পতনের আগপর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে নানা অবৈধ সুযোগ–সুবিধা নিয়েছেন। অসংক্রমাক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর থাকার সময় কেনাকাটায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। যেখানে তাঁর শাস্তি হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের দাবির পরও সরকার যদি রোবেদ আমিনকে না সরায়, তখন আপনারা কী করবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসকেরা বলেন, তাঁরা রোবেদ আমিনকে প্রতিহত করবেন। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নয়, সারা বাংলাদেশে। তাঁরা আরও বড় আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে বিশষজ্ঞদের নিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে, তার আহ্বায়ক এক–এগারো সরকারের সুবিধাভোগী। তাঁরা এই কমিটির পুনর্গঠনের দাবি জানান।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রোবেদ আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সরকারি কর্মকর্তা। আমি এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয় মহাপরিচালক পদে রোবেদ আমিনকেই রাখতে চায়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে।