স্বামীর সঙ্গে অভিমান, ইঁদুরের বিষ খেয়ে মৃত্যু
স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার খলাপাড়া গ্রামে ইঁদুরের বিষ খেয়ে ময়না আক্তার নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ওই গৃহবধূর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড়াই বছর আগে খলাপাড়া গ্রামের নাছির উদ্দিনের সঙ্গে একই উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের সামছুল হকের মেয়ে ময়না আক্তারের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাঁদের আট মাস বয়সী এক ছেলেসন্তান রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে গৃহবধূ ময়না স্বামীর অনুমতি নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। দুই দিন বাবার বাড়িতে থাকার পর স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন। গত তিন–চার দিন আগে ওই গৃহবধূর তিন বছর বয়সী ছোট ভাই নাঈম জ্বরে আক্রান্ত হয়।
অসুস্থ ছোট ভাইকে দেখতে যেতে তিনি স্বামীর অনুমতি চান। কিন্তু কৃষিকাজ ও পারিবারিক কাজের চাপ থাকায় ময়নাকে বাবার বাড়িতে যেতে অনুমতি দেননি নাছির।
গত বুধবার রাতে স্বামী–স্ত্রী দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। অসুস্থ ছোট ভাইকে দেখতে যেতে না পেরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে গতকাল বেলা দুইটার দিকে নিজেদের বসতঘরে থাকা ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে ফেলেন ময়না আক্তার। কিছুক্ষণ পর শরীরে অস্বস্তি বোধ করেন এবং ইঁদুরের বিষ খেয়েছেন বলে শাশুড়ি ও তাঁর স্বামীর কাছে স্বীকার করেন। গতকাল বেলা তিনটার দিকে তাঁকে ধরমপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে সাময়িক চিকিৎসা দেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন তাঁর স্বামী। রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। সে তাঁর অসুস্থ ভাইকে দেখতে বাবার বাড়ি যেতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম কয়েক দিন পরে যাওয়ার জন্য। আমাদের মধ্যে কোনো কথা–কাটাকাটি হয়নি। কেন যে ইঁদুরের বিষ খেল, বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রীর লাশ এখনো হাসপাতালের মর্গে।’
ময়না আক্তারের বাবা সামছুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভালোই ছিল। হঠাৎ কেন বিষ খেল, বুঝতে পারছি না।’
ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’