স্টেডিয়ামের উন্নয়নকাজে ধীরগতি, ক্রীড়াঙ্গন স্থবির
গাজীপুরে শহীদ বরকত স্টেডিয়ামের উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে ধীরগতিতে। গত দুই বছরে কেবল সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ শেষ হয়েছে। চলতি মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও দর্শক গ্যালারি তৈরি হয়নি। এ ছাড়া মাটি ভরাটের কাজও শেষ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় জেলার ক্রীড়াঙ্গন স্থবির হয়ে পড়েছে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, স্টেডিয়ামের উন্নয়ন ও সংস্কারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ২০১৪ সালে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর উন্নয়নকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে দেড় শ ফুট দর্শক গ্যালারি ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ এবং মাটি ভরাট। প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা চলতি বছরের অক্টোবরে। উদ্বোধনের পরপরই কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিয়াম করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী ঢাকা উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। তবে শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রকল্পের কাজে ধীরগতির অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। দর্শক গ্যালারির কিছু অংশ তৈরি হয়েছে। মাঠজুড়ে বালির স্তূপ। নারী শিক্ষার্থীরা মধ্য মাঠের এক কোনায় ছোট করে সীমানা বানিয়ে ক্রিকেট খেলছেন। খেলার আম্পায়ার হিসেবে রয়েছেন জাকির হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। জাকির হোসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তালিকাভুক্ত আম্পায়ার। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে স্টেডিয়ামে কোনো লীগ হয় না। স্কুলপর্যায়ের খেলাগুলোও প্রায় বন্ধ। মাঠের সংস্কারকাজ করতে কত দিন লাগবে তা অজানা। খেলাধুলার ভালো পরিবেশ না থাকায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ছেলেমেয়েরা।’
গাজীপুর মহিলা কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাদিয়া আক্তার ও মিলি রহমান বলেন, স্টেডিয়াম ছাড়াও রাজবাড়ি মাঠ রয়েছে। কিন্তু ওই মাঠে সারাবছরই সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে খেলাধুলার পরিবেশ নেই। এই স্টেডিয়ামই একমাত্র ভরসা।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম বলেন, গাজীপুর খেলাধুলায় অনেক পিছিয়ে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্টেডিয়ামের জন্য কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যাচ্ছে না।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক মো. রফিজ উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণেই স্টেডিয়ামের উন্নয়নকাজ শেষ হচ্ছে না। আগামী ছয় মাসেও কাজ শেষ হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মালিক ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় তাঁকে কিছু বলাও যাচ্ছে না।
উন্নয়নকাজে ধীরগতির কথা স্বীকার করে ইসমাইল হোসেন বলেন, আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করে দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে জাহিদ আহসান রাসেল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্টেডিয়ামের কাজের ধীরগতির বিষয়টি মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।