স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় কারাদণ্ড
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১২) উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে এক চা বিক্রেতাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রোববার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চা বিক্রেতাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত চা বিক্রেতার নাম মো. তছিউর রহমান (৫০)।
উপজেলা প্রশাসন ও ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন চা বিক্রেতা তছিউর। পাঁচ মাস আগে একটি পরিবার তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে একই বাসায় ভাড়াটে হিসেবে ওঠেন। পরিবারে সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করছিলেন তছিউর। বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাবও দেন বলে দাবি এই পরিবারের। ছাত্রী তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ছাত্রীর বাবাকে মেয়ে সম্পর্কে নানা রকমের বাজে কথা বলেন তছিউর। এমনকি মেয়েটির বিদ্যালয়ে গিয়েও মেয়েটির নামে আজেবাজে কথা ছড়ান।
সেই লজ্জায় মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দেন বাবা। এক সপ্তাহ বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ থাকার পর মেয়েটির মা বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁর মেয়ে সম্পর্কে জানতে চান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মেয়েটি সম্পর্কে ভালো তথ্য দিলে ফের বিদ্যালয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন তার বাবা।
তবে গত শনিবার দুপুরের দিকে মেয়েটি বাথরুমে গোসল করতে গেলে তছিউর সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করেন। পরে মেয়েটি তার মাকে বিষয়টি জানায়। তার মা এর প্রতিবাদ করলে তছিউর ক্ষুব্ধ হয়ে দা নিয়ে মেয়েটিকে মারতে আসেন। এ সময় মেয়েটি ভয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমানকে অবহিত করা হয়। ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে তছিউরকে আটক করেন। পরে তিনি প্রতিবেশী কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়ায় তছিউরকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পুলিশ গতকাল রাতে তছিউরকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে।
ইউএনও প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের মা-বাবা, ভাইবোন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করেন বলে জানান। পরে প্রতিবেশীরাও এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পুলিশ রাতেই তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছে।