আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য করার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রস্তাবটি এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের নবম ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেসম্যান উইলিয়াম কিটিং। তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচ কংগ্রেস সদস্য টেড ইয়োহো, এলিয়ট ইঙ্গেল, ব্র্যাড শারমেন, স্টিভ শ্যাবট ও জেরি কনোলির পে ওই প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপন করেন। এরপর রীতি অনুযায়ী তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
এই প্রস্তাবে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মিয়ানমারের ‘মনুষ্যসৃষ্ট ওই সংকটের’ কারণেই বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, কংগ্রেসম্যান উইলিয়াম কিটিংয়ের প্রস্তাবে চারটি দফা রয়েছে। প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উৎসাহিত করতে প্রতিনিধি সভার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান জানাতে এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধকে গুরুত্ব দিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবের তৃতীয় দফায় আসন্ন নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক এবং সব বাংলাদেশির স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিচারিক কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আরও উদ্বেগ
বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন কিছু আইন করা হয়েছে। এসব আইনের মাধ্যমে সরকারের সমালোচনাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছে এখানকার সুশীল সমাজ।
৩০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শুক্রবার এক অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে লর্ড আহমেদ এসব কথা বলেন। মানবাধিকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকেরা প্রায়ই হামলার শিকার হন। তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকেরা নিজেদের রক্ষায় কীভাবে কাজ করবেন, সে বিষয়ে সহায়তা করতে মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইন্টিনের সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া তারা আসন্ন নির্বাচনের ওপর নজর রাখছে।