সুদীপ্ত হত্যা: জামিনে মুক্তি পেলেন দিদারুল
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় করা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম ওরফে মাসুম। আজ বুধবার বিকেলে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
নগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আর দিদারুল আলম মাসুম চট্টগ্রামের লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সুদীপ্ত হত্যায় গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দুই মাস পর তিনি জামিনে মুক্তি পেলেন। এরপর ১৩ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করলে আদালত দিদারুলকে কারাগারে পাঠান।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে জামিননামা আসার পর যাচাই-বাছাই করে দিদারুলকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি মো. মুরাদ ও মিজানুর রহমানের জবানবন্দিতে উঠে আসে এই খুনের নির্দেশদাতা লালখান বাজার এলাকার বড়ভাই দিদারুল। যদিও শুরু থেকে তিনি দাবি করে আসছেন, রাজনৈতিক কারণে তাঁকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী না হতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানাধীন নালাপাড়ার বাসায় হানা দিয়ে সুদীপ্তকে ঘুম থেকে তুলে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাঁকে কয়েকজন সন্ত্রাসী বেদম পেটায়। মেডিকেলে নেওয়া হলে সুদীপ্তকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুদীপ্ত খুনের ঘটনায় ১৫-১৬ জনের নাম এসেছে। চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেছিলেন সুদীপ্ত। এ ঘটনার জেরে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রেপ্তার একাধিক আসামি আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন ঘটনার দিন পরিকল্পনামতো নগরের লালখান বাজার থেকে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে নালাপাড়ায় সুদীপ্তের বাসার সামনে যান প্রায় ১৫ থেকে ১৬ জন। তাঁদের হাতে অস্ত্র, লোহার রড ও পাইপ ছিল। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। এদিকে ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার মধে৵ সাতটি অটোরিকশা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।