সারা বিশ্বই ছিল চে'র দেশ
এর্নেস্তো চে গুয়েভারাকে নিয়ে স্মরণানুষ্ঠানে তাঁকে ‘আন্তর্জাতিকতাবাদী বিপ্লবী’ বলে উল্লেখ করে বক্তারা বলেছেন, তাঁর একক কোনো দেশ ছিল না, সারা বিশ্বই ছিল তাঁর দেশ। তিনি নিজেকে ত্যাগী জীবনের দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চে সংহতির আয়োজনে স্মরণানুষ্ঠানে ছিল আলোচনা, আবৃত্তি ও গান। চে সংহতি ২০০৮ সাল থেকে এ স্মরণানুষ্ঠান করে আসছে।
লেখক-গবেষক সলিমুল্লাহ খান বলেন, চে গুয়েভারাকে কার্ল মার্ক্সের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বিপ্লবী ভাবা যায়। আবার তাঁকে অপূর্ব বিপ্লবীও বলা যায়। তিনি ঘটনা দেখে শিক্ষা নিতেন, কারও কোনো উদ্ধৃতি থেকে নয়। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যে সাম্রাজ্যবাদ টিকতে পারে না, চে সব সময়ই এটা বিশ্বাস করতেন। যাঁরা বলেন চের গেরিলা যুদ্ধ ব্যর্থ, তাঁরা সঠিক বলেন না।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, চে গুয়েভারা সব সময়ই বিশ্বাস করতেন, মুক্তির জন্য তাঁর নিজের কোনো প্রাপ্তির প্রয়োজন নেই। যেকোনো প্রয়োজনেই তিনি এগিয়ে যাবেন। গীতায় আছে, ‘ফলের প্রত্যাশা না করে কর্ম’-চের মধ্যে তা-ই দেখা যায়। তিনি সব সময়ই বিশ্বাস ও কর্মের মধ্যে সমন্বয় করতেন। তিনি আরও বলেন, ‘সামনে কোনো অন্যায় দেখলে চে চুপ করে থাকতে পারতেন না। অথচ আমাদের সামনে ব্লগারদের হত্যা করা হলেও আমরা চুপ করে থাকি।’
চে সংহতির সমন্বয়কারী শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু বলেন, সস্তা পণ্যের বিজ্ঞাপনে চে গুয়েভারাকে অবাঞ্ছিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যে আদর্শের জন্য তিনি বিশ্ব বিপ্লবী সংগ্রামী পরিচয়ে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন, চে গুয়েভারার সেই শাণিত রূপ প্রকাশ করতে এই আয়োজন।
গানের দল মৃত্তিকা চে’কে নিয়ে পরিবেশন করে ‘জীবনে আলো’, ‘থেমো না, থেমো না’ ‘কমান্দান্তে চে গুয়েভারা’ গানগুলো।
অনুষ্ঠানে বাপ্পা মজুমদার ‘তুমি আমার বায়ান্ন তাস’ ‘আমি তোমার’ এবং সজীব ‘নিশীথ রাত্রির প্রতিধ্বনি শুনি’ ছাড়া আরও দুটি গান পরিবেশন করেন।
কবি জীবনানন্দ দাশ, আসাদ চৌধুরী ও জাফর ওয়াজেদের তিনটি ছোট্ট কবিতা আবৃত্তি করেন জাহীদ রেজা নূর। বিজয় দিবস নিয়ে নিজের একটি আবেগঘন লেখাও তিনি উপস্থাপন করেন।