সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুজিবুল হক আর নেই
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও ভাষাসংগ্রামী মুজিবুল হক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাজধানীর বারডেম কার্ডিয়াক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মুজিবুল হকের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ১৯৩০ সালে বরিশালের বানারীপাড়ায় জন্ম তাঁর। মুজিবুল হকের পারিবারিক সূত্র জানায়, আজ সোমবার বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
মুজিবুল হক স্ত্রী, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর বারডেম কার্ডিয়াক সেন্টারে ভর্তি হন তিনি। এর পর থেকে তাঁর শরীরের অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মুজিবুল হক শিক্ষাজীবন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস (সিএসপি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তিনি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে মুজিবুল হক ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারির পর আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের যে সভা হয়েছিল, সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি রক্তাক্ত ঘটনার তিনি প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তখন পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শিকার হয়েছিলেন তিনি। ২২ তারিখের আন্দোলনে মুজিবুল হক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের তৎকালীন ভিপি। ১৯৫২ সালের ৭ মার্চ শান্তিনগরে ডা. মোত্তালেব সাহেবের বাড়িতে যে গোপন বৈঠক হয়েছিল, সেখান থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এক মাস পর মুক্তি পান। ওই সময় তাঁকে পাঁচ দিন ইন্টারোগেশন সেলে রাখা হয়।
মুজিবুল হকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শোক প্রকাশ করেছেন। পৃথক শোক বিবৃতিতে তাঁরা সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালনকালে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করেন।