সাংসদ শহিদের স্ত্রী–মেয়ের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক
কুয়েতে কারাবন্দী লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ শহিদ ইসলামের (পাপুল) স্ত্রী সাংসদ সেলিনা ইসলাম ও তাঁদের মেয়ে ওয়াফা ইসলামের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নোটিশপ্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক আকতার হোসেন আজ মঙ্গলবার সম্পদের হিসাব চেয়ে দুটি পৃথক নোটিশ পাঠান। নোটিশে সেলিনা ইসলাম ও ওয়াফা ইসলামের নিজের এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্বনামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ছকে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১১ নভেম্বর সাংসদ শহিদ ইসলামের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় শহিদের স্ত্রী সাংসদ সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকেও আসামি করা হয়।
জেসমিন প্রধানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও পাচার ছিল ওই মামলার মূল অভিযোগ। মামলার এজাহারে বলা হয়, জেসমিন প্রধান ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে রয়েছে ৩৪টি এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এ ছাড়া তিনি নিজের জন্মতারিখের তথ্য গোপন করে পাসপোর্ট নেন বলেও মামলায় অভিযোগ আনা হয়।
মূলত জেসমিন তাঁর ভগ্নিপতি শহিদ ইসলাম, বোন সেলিনা ইসলাম, ভাগনি ওয়াফা ইসলামের অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে এফডিআর করে রেখেছেন। শহিদ ইসলাম এই ব্যাংকের একজন পরিচালক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কুয়েতের আদালতে মানব পাচারের বিচার চলছে।
সাংসদ শহিদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত জুলাইয়ে সেলিনা ইসলাম ও জেসমিন প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। একই সঙ্গে তাঁদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। সাংসদ শহিদ দেশে ফিরলে আর যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হয়ে আলোচনায় আসেন শহিদ ইসলাম। পরে স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সাংসদ করেন।