ফরিদপুর-৪ আসনে ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। তখন তাঁর কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ৩৮ শতাংশ। ওই সময় ভাঙ্গায় তাঁর কোনো কৃষিজমি ছিল না। পাঁচ বছরে ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকাতেই তিনি ৯৭৫ দশমিক ২৩ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সময়ে তাঁর কৃষিজমি বেড়েছে ২৬ গুণ। পাশাপাশি ব্রাহ্মণপাড়ায় সাংসদের একটি দোতলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। আর হেবামূলে ঢাকার বনানীতে দশমিক ৮১ শতাংশ জমির ওপর ৩ হাজার ৭১৬ বর্গফুট আয়তনের একটি বাড়ির মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া উত্তরাধিকার সূত্রে ঢাকার পূর্বাঞ্চল প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লটের মালিক হয়েছেন।
কৃষিজমি বাড়লেও এই খাত থেকে মজিবুর রহমানের আয় কমেছে। পাঁচ বছর আগে তাঁর আয় ছিল প্রায় ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা বেশি, যার মধ্যে কৃষি থেকে ছিল ২ কোটি ৫ লাখ টাকা। এবার তিনি আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ২২ লাখ টাকা, যার মধ্যে কৃষি খাত থেকে এসেছে মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এর বাইরে তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৪০ লাখ টাকা।
মজিবুর রহমানের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমান। এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ।
>ফরিদপুর–৪ আসনের এই স্বতন্ত্র সাংসদের কৃষি জমি বাড়লেও এই খাত থেকে তাঁর আয় কমেছে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, সাংসদ মজিবুর ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে ৯৭৫ দশমিক ২৩ শতাংশ জমি কিনেছেন, যার ব্যয় দেখিয়েছেন ৩ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার ৯১০ টাকা। পাঁচ বছর আগে অকৃষিজমির মধ্যে সাংসদের নিজের নামে ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ ও স্ত্রীর নামে ৭ দশমিক ৫ কাঠা ছিল। পাঁচ বছর পর সাংসদের অকৃষিজমির মধ্যে রয়েছে শিবচর হাউজিং প্রকল্প এলাকায় ৫ কাঠা (১৫ লাখ ৫৮ হাজার ১৫০ টাকা ব্যয়ে)। ঢাকার আদাবর এলাকায় দশমিক ২১৫ অযুতাংশ জমি। শিবচর দত্তপাড়া এলাকায় দশমিক ৩৮ শতাংশ (৫ লাখ ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা)। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে শিবচরে একটি হাউজিং প্রকল্পে ৫ কাঠা জমি (৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা)।
পাঁচ বছর আগে সাংসদের স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট ছিল। এখন তাঁর নামে ঢাকার বনানীতে দশমিক ৮১ শতাংশ ভূমি ৩ হাজার ৭১৬ দশমিক ১১ বর্গফুটবিশিষ্ট (হেবামূলে) এবং ভাঙ্গার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় দোতলা একটি ভবনের কাজ চলমান রয়েছে, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে ঢাকার প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের একটি ফ্ল্যাট, যার মূল্য ৪০ লাখ টাকা এবং গুলশানে ১ দশমিক ৪৯ কাঠার ওপর ৪ দশমিক ৮৯১ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, যার দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
পাঁচ বছর আগে মজিবুর রহমানের শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। পাঁচ বছর পর ব্যাংকে মুনাফার পরিমাণ ৫ লাখ ২৫ হাজার ৬৬৭ টাকা। তাঁর আয়ের ক্ষেত্রে নতুন যেসব খাত যুক্ত হয়েছে তা হলো, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত পারিতোষিক হিসেবে বছরে পান ২৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৮ টাকা। স্টক ব্যবসা থেকে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯০০ টাকা।