সাংসদ নিক্সনের বিচার চেয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে হুমকি এবং ইউএনওর ফোনে এসি ল্যান্ডকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগে আলোচিত স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের বিচার চেয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এই সংগঠনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং মহাসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুনের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার এ দাবি জানানো হয়েছে।
এর আগে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার ওই ঘটনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানালে সেটি নির্বাচন কমিশনে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ অবস্থায় ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা জানিয়েছেন আজ বুধবার বা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ মামলা করা হবে।
চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শনিবার ফরিদপুরের ডিসিকে ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। একই দিন চরভদ্রাসনের ইউএনওর ফোনে কল করে তিনি গালিগালাজ করেছেন ভাঙা উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। এই দুই ঘটনার ভিডিও চিত্র ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য গালিগালাজের যে অডিও ছড়িয়েছে, সেটি বানোয়াট বলে দাবি করেছেন মুজিবর রহমান চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে সাংসদ দাবি করেন, তাঁর বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে। এমন গালিগালাজ তিনি করেননি।
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণ তুলে বলা হয়, ডিসিকে অত্যন্ত মানহানিকরভাবে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি এবং অনুসারীদের দিয়ে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিতে উৎসাহিত করা একজন সাংসদ অথবা একজন সুস্থ মানসিকতাসম্পন্ন ভদ্রলোকের পক্ষে অকল্পনীয়। এ ছাড়া ইউএনও একজন নারী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও একজন সাংসদ যে ধরনের অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা বাঙালি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি চরম অবমাননাকর। অ্যাসোসিয়েশন এই মানহানিকর ও অশোভন উক্তির তীব্র নিন্দা জানায় এবং তা যথাযথ অনুসন্ধান করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচারের দাবি জানায়।