শুরু হলো দিনব্যাপী তারুণ্যের জয়গান
কোন পেশার ভবিষ্যৎ কেমন, ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করতে হবে? তরুণেরা কি সহিংস উগ্রবাদ চায়, নাকি মেধা, দক্ষতা, উদ্যম ও সাহসের সঙ্গে বিজয় ছিনিয়ে আনবে?—এমন নানা প্রশ্ন উঠে এল তরুণদের এক আয়োজনে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়েছে ‘তারুণ্যের জয়গান’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। আর এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে হাজির প্রায় ৪৫০ তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরী। সেখানেই এসব প্রশ্নের অবতারণা।
‘তারুণ্যের জয়গান’–এর স্লোগান হচ্ছে ‘আলোর পথে প্রীতির সাথে’। কিশোর আলো দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সহযোগী হিসেবে আছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্প ও প্রথম আলোর সাময়িকী স্বপ্ন নিয়ে। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য সহিংস উগ্রবাদ থেকে তরুণদের সচেতন করা ও দূরে রাখা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও গ্রে বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার ও চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার সৈয়দ গাউছুল আলম শাওন। তিনি তরুণদের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক পরামর্শ দেন। তরুণদের তিনি বলেন, অনেকে ভাবে, জীবনে একটা কিছু করতে হবে। এটা ঠিক না। একটা মানুষ জীবনে অনেক কিছু করতে পারে। তাই একটা কিছু করব ভেবে একটা কিছুর পিছে লেগে থাকলে চলবে না। মানুষের এইম ইন লাইফ একটার বেশিও হতে পারে।
নিজের স্বপ্নকে মরতে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সৈয়দ গাউছুল আলম শাওন তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বপ্ন তোমাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাবে, যেটা তুমি কেন, সমাজও ভাবেনি কখনো। তাই তুমি স্বপ্নের পথ খোলা রাখো। আজকের পৃথিবীতে এত সুযোগ যে চাকরিই করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। বন্ধুরা, সহকর্মীরা, সহপাঠীরা কিংবা নিজে উদ্যোক্তা হয়ে কিছু একটা করো। তবে ধৈর্য ধরতে হবে। হুট করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।’
দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে মঞ্চে আসেন আলোকচিত্রী প্রীত রেজা। তিনি বলেন, কার সঙ্গে মিশছি—এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের কথা শোনার প্রয়োজন নেই। নিজের মনের কথা শুনতে হবে। তবে অন্যকে সমালোচনা করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করেন, আপনি কী করেছেন। প্রীত রেজা আরও বলেন, ‘কেউ পদার্থবিদ, কেউ চিকিৎসক, কেউ আলোকচিত্রী হতে চায়। কিন্তু আমরা কী হয়ে কী করব, সেটা জানি না। কী হব, কী হয়ে কী করব এবং কেন করব, সেই প্রশ্নটা তুলতে হবে। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়াতে হবে। নিজের স্বপ্নের পথ ধরতে হবে। চাকরির বাজারে যে ট্রেন্ড চলছে, সেটা ধরতে নিজেকে প্রস্তুত করতে করতে সেই ট্রেন্ড নাও থাকতে পারে। আপনি তৈরি হতে হতে সে ট্রেন্ড থাকবে না। এর চেয়ে নিজে একটা ট্রেন্ড তৈরি করেন। তবে সেটার জন্য দরকার নিজের কাজের প্রতি খ্যাপাটে ভাব ও ভালোবাসা।’
দিনব্যাপী এ আয়োজনে আরও থাকছে লেখক আনিসুল হকের সাহিত্য নিয়ে অধিবেশন, চলচ্চিত্র নিয়ে রেদওয়ান রনির অধিবেশন, সাংবাদিকতা নিয়ে প্রথম আলোর ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমীনের অধিবেশন এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের অধিবেশন। এ ছাড়া থাকছে সাংস্কৃতিক আয়োজন, জলের গান ও সন্ধি ও সভ্যতার গান।
সকাল নয়টা থেকেই ছিল অনুষ্ঠানস্থলে ছিল তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের দীর্ঘ সারি। তারা নাম ও তথ্য নিবন্ধন করে প্রধান মিলনায়তনে ঢোকে। প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে।