শুভাঢ্যা খাল দখল-দূষণমুক্ত অভিযান

শুভাঢ্যা খালে চলছে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ। গতকাল দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো
শুভাঢ্যা খালে চলছে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ। গতকাল দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো

কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল দখলমুক্তকরণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে।
গতকাল সোমবার কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল থেকে শুভাঢ্যা খালের সম্মুখ প্রান্তে এই অভিযান শুরু হয়। এতে খালের পূর্ব আগানগর এলাকায় বুড়িগঙ্গা সংযোগস্থল থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকার দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য পরিষ্কার করা হয়।
শুভাঢ্যা খাল দখল ও দূষণরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে কাল বুধবার বিকেলে ঢাকা জেলা প্রশাসন ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এবং প্রথম আলো বন্ধুসভা কেরানীগঞ্জ শাখার সহযোগিতায় শৌখিন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা মধ্যপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, খালে ‘পেলোডার’ দিয়ে ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানা তুলে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া খালের প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলমুক্ত করা হচ্ছে। খালের ভেতরে চলছে ছোট-বড় খেয়ানৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ।
শুভাঢ্যা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সাথী আলী জানান, সকাল থেকে শুভাঢ্যা মধ্যপাড়া, কালীবাড়ি ও শ্মশানঘাট এলাকায় খালের মধ্যে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে এবং পেলোডারের সাহায্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ চলছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝাউবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সোহেল রহমান (৪০) জানান, এর আগেও শুভাঢ্যা খালটি একাধিকবার পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু খালে বর্জ্য ফেলায় অভিযানের সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আবার দূষিত হয়ে পড়ে। একইভাবে শুরু হয় খালপাড় দখলের প্রক্রিয়া। খালটি রক্ষায় স্থায়ীভাবে দখল ও দূষণরোধের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
শুভাঢ্যা মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা সিরাজউদ্দিন (৫৮) বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় এখানে মাছ ধরেছি। বর্তমানে খালটি ময়লা-আবর্জনা ও পানিদূষণ হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে খালের কাছে যাওয়া যায় না। খালটি দূষণমুক্ত করা হলে আমরা অন্তত মশার উপদ্রব থেকে রেহাই পাব।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্য শুভাঢ্যা খাল রক্ষার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। খালের দুই পাশে স্ল্যাব বসিয়ে তীর রক্ষা করা হচ্ছে। পাশ দিয়ে জনসাধারণের চলাফেরার জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। খালের দুই পাশের জায়গায় গাছ লাগানো হবে। তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই শুভাঢ্যা খাল দখল ও দূষণ করতে দেওয়া হবে না। খাল দখল ও দূষণকারী যে-ই হোক, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও ডাইং কারখানাগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।