সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রথম আলোর পেজ দেড় কোটির দুটি মাইলফলক পেরিয়েছে। গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ফেসবুকে প্রথম আলোর ভেরিফায়েড পেজে (fb.com/DailyProthomAlo) লাইকের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ৩ হাজার। আর অনুসারী ১ কোটি ৫৬ লাখ ৭৯ হাজার। এর মধ্য দিয়ে প্রতিদিন খবর পরিবেশন করে, এমন সংবাদমাধ্যমের বিশ্ব তালিকায় শীর্ষ দশে স্থান পেল প্রথম আলো।
বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ফেসবুক সবচেয়ে জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও তা–ই। ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটসের পরিসংখ্যানে গত জুন মাস পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার ব্যবহারকারীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
ফেসবুকে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী থাকায় সংবাদ পাওয়ার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের গত বছর করা এক জরিপে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিকদের অর্ধেকের বেশি খবর পান ফেসবুক থেকে। বাংলাদেশিদের বেলায় সংখ্যাটা কমবেশি এমনই হওয়ার কথা।
এই যে বিপুলসংখ্যক মানুষ ফেসবুকে প্রথম আলোর পেজ অনুসরণ করেন, তা নির্ভরযোগ্য সংবাদের খোঁজেই। আর সে কারণেই কোনো পোস্টে ব্যবহারকারীর সাড়া ও সম্পৃক্ততা, ফেসবুকের ভাষায় যাকে এনগেজমেন্ট বলা হয়, সে হিসাবে সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো বরাবরই এগিয়ে থেকেছে। সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই।
এই যে বিপুলসংখ্যক মানুষ ফেসবুকে প্রথম আলোর পেজ অনুসরণ করেন, তা নির্ভরযোগ্য সংবাদের খোঁজেই। আর সে কারণেই কোনো পোস্টে ব্যবহারকারীর সাড়া ও সম্পৃক্ততা, ফেসবুকের ভাষায় যাকে এনগেজমেন্ট বলা হয়, সে হিসাবে সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো বরাবরই এগিয়ে থেকেছে। সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই।
বিশ্বে শীর্ষ দশে প্রথম আলো
দৈনিক সংবাদপত্র ও সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজগুলোর তালিকায় লাইকসংখ্যার বিচারে প্রথম আলো এখন বিশ্বে শীর্ষ দশে রয়েছে। ‘ডেইলি নিউজ’ বিভাগের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেবল ভারতের হিন্দি ভাষার নিউজ পোর্টাল ও চ্যানেল আজ তাক এগিয়ে আছে প্রথম আলোর চেয়ে। তালিকাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গবেষণা প্রতিষ্ঠান সোশ্যালবেকারসের করা।
তালিকার শুরুতে রয়েছে চীনের পিপলস ডেইলি। এরপর চীনের গ্লোবাল টাইমস, ভারতের আজ তাক, মিয়ানমারের ৭ডে নিউজ জার্নাল ও ইলেভেন মিডিয়া গ্রুপ, মিসরের ইউম-৭, যুক্তরাষ্ট্রের দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল, মরক্কোর হেসপ্রেস এবং দশম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম আলো।
সোশ্যালবেকারসের পরিসংখ্যানে সব ধরনের ফেসবুক পেজের বৈশ্বিক তালিকায় প্রথম আলোর অবস্থান ৫১০ নম্বরে। এ তালিকার শীর্ষ পাঁচে আছে পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ, চীনভিত্তিক সংবাদ পোর্টাল সিজিটিএন, স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা এবং কলম্বিয়ার সংগীতশিল্পী শাকিরার ফেসবুক পেজ।
দৈনিক সংবাদপত্র, সাময়িকী ও জার্নাল, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, বার্তা সংস্থা, রেডিও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ক্রীড়ামাধ্যম, টিভি চ্যানেল এবং ওয়েব পোর্টালের ফেসবুক পেজগুলো মিডিয়া বা গণমাধ্যম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। এ বিভাগে বিশ্বে প্রথম আলো ৬৭তম স্থানে রয়েছে। শীর্ষ পাঁচে আছে চীনের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিজিটিএন, ইউটিউব, পিপলস ডেইলি, ইনস্টাগ্রাম এবং চীনের ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস। এই গণমাধ্যম বিভাগে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথমে আছে ভারতের আজ তাক এবং দ্বিতীয় এবিপি নিউজ। এরপরে রয়েছে পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজ ও পিটিভি স্পোর্টস। আর পঞ্চম অবস্থানে বাংলাদেশের প্রথম আলো।
এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত
প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ খোলা হয় ২০১০ সালের নভেম্বরে। ২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি ভেরিফায়েড পেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। একই বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রথম ১০ লাখ অনুসারীর মাইলফলক ছোঁয়। আর ১ কোটি অনুসারীর মাইলফলক পেরিয়ে যায় ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। প্রথম আলোর মূল ফেসবুক পেজের পাশাপাশি প্রতিটি ফিচার পাতা, খেলা এবং ইংরেজি সংস্করণের ফেসবুক পেজ আছে। সেসব পেজের মাধ্যমেও নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে, পাঠকের সম্পৃক্ততাও ভালো।
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এখন বলা হচ্ছে মোবাইলই প্রথম। ডিজিটাল মাধ্যমে আমরা মানুষের আরও কাছে যেতে চাই। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন দেশ-বিদেশ থেকে বাঙালিরা আরও বেশি করে প্রথম আলোর সংবাদ পাচ্ছেন।
শুধু ফেসবুকেই নয়
অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এগিয়ে যাচ্ছে প্রথম আলো। সোশ্যালবেকারসের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশি টুইটার অ্যাকাউন্টগুলোর তালিকায় প্রথম আলো তৃতীয়। গণমাধ্যম বিভাগে প্রথম। টুইটারে ১৬ লাখ ৬০ হাজার এবং ইনস্টাগ্রামে ৪ লাখ ১৩ হাজার ব্যবহারকারী প্রথম আলো অনুসরণ করেন। ইউটিউবে প্রথম আলোর গ্রাহকের (সাবস্ক্রাইবার) সংখ্যা ২২ লাখ ৫০ হাজার।
প্রথম আলো ডটকম (www.prothomalo.com) সব ধরনের বাংলাদেশি ওয়েবসাইট ও বাংলা ভাষার ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে বিশ্বে ১ নম্বর স্থানে রয়েছে। ২১০টির বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে অনলাইনে নিয়মিত প্রথম আলো পড়েন ১ কোটি ২০ লাখের বেশি পাঠক। পাঠকসংখ্যা বিশ্লেষণ ও র্যাঙ্কিংকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যালেক্সায় প্রথম আলো বাংলাদেশে চতুর্থ এবং বিশ্বে ৪৫৪তম। বাংলাদেশে প্রথম আলোর আগে রয়েছে গুগল, ইউটিউব ও ফেসবুক।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এ নিয়ে বলেন, ‘সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এখন বলা হচ্ছে মোবাইলই প্রথম। ডিজিটাল মাধ্যমে আমরা মানুষের আরও কাছে যেতে চাই। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন দেশ-বিদেশ থেকে বাঙালিরা আরও বেশি করে প্রথম আলোর সংবাদ পাচ্ছেন। দৈনিক সংবাদপত্র ও সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজগুলোর তালিকায় লাইকসংখ্যার বিচারে প্রথম আলো এখন বিশ্বে শীর্ষ দশে। আমাদের জন্য এটা খুবই আনন্দের সংবাদ।’