ডান পায়ের চারটি জায়গায় স্প্লিন্টারের ক্ষতচিহ্ন আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে একটি স্প্লিন্টার বের করা হয়েছে। কিন্তু বাকি তিনটি জায়গায় এখনো স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথায় অনেক সময় হাঁটতেও সমস্যা হয়।
বলছিলেন ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলায় আহত সুমি আক্তার (৩৪)। সেদিনের ওই বোমা হামলায় নিহত হয়েছিল তাঁর দেবর কেরানীগঞ্জের স্কুলছাত্র সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সানজু। আহত হয়েছিল সুমির মেয়ে সাজিয়া সুলতানা স্নেহা (১৩) ও মা আয়শা বেগম (৫৫)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার বাবুবাজার এলাকার বাড়িতে কথা হয় সুমি আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে সাজিয়া সুলতানার শরীরেও স্প্লিন্টার আছে। মাঝেমধ্যে সে ব্যথায় কান্নাকাটি করে। এ ছাড়া তাঁর মা আয়শা বেগমের শরীরে ও হাতে অনেক স্প্লিন্টার রয়ে গেছে।
সাজিয়া সুলতানা বলল, ‘গত বুধবার রাতে আমি হোসেনি দালান গিয়েছিলাম। সেখানে গেলে এখনো ভয় ভয় লাগে।’
সাজিয়ার বাবা মো. রাশেদ বলেন, মুঠোফোন রিচার্জের ব্যবসা করে তিনি কোনোমতে সংসার চালান। টাকার অভাবে পরিবারের আহত সদস্যদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
সেদিনের ওই বোমা হামলায় সাজ্জাদ হোসেনসহ দুজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছিলেন।
সাজ্জাদ কেরানীগঞ্জের চড়াইল নুরুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ছেলে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তার মা রাশেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘আইজকা আমার পোলা সানজুর মৃত্যুর তিন বছর পার অইলো। ও আজ বাঁইচা নাই। তার ব্যবহার করা স্কুলব্যাগ আমার কাছে স্মৃতি হইয়া আছে। সানজুর কথা মনে হইলে এই ব্যাগ খুইলা তার বই-খাতা দেখি।’ রাশেদা বেগম আরও বলেন, ‘পোলা মারা যাওয়ার দুই দিন পর সরকার আমগো ২০ হাজার টাকা দিছে। এর মধ্যে আর আমগো কেউ খবর নিত আহে নাই। আমরা কিমুন আছি।’