শখের মোটরসাইকেলেই প্রাণ গেল তরুণের
মোটরসাইকেল চালানো তরুণ আহসান হাবীবের শখ। কয়েক বছর আগে কেনা বাইকটি নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। বাইক চালানোর সময় সতর্ক করতেন বন্ধুদের। কিন্তু সেই বাইকই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ।
আহসান হাবীব গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর চৌমুহনী এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাবীবের মৃত্যুর খবরে ফেসবুক ভাসছে বন্ধু ও স্বজনদের শোকে। তিনি বাইকারদের সংগঠন রাঙ্গুনিয়া বাইক লাভার্স নামে একটি সংগঠনের অ্যাডমিন। ব্যবসা করতেন জ্বালানি তেলের। হাবীব উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের লিচুবাগান এলাকার মো. হাসানের ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার তাঁর জন্মদিন ছিল। রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে জন্মদিনে শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন এভাবে—‘সকলে যেভাবে আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল, তাতে আমার কাছে মনে হলো আমি যেন তাঁদের কত যুগ যুগ বছরের আপনজন!’এটি তাঁর শেষ স্ট্যাটাস ছিল। স্ট্যাটাসের নিচে তাঁর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শোকের মন্তব্য দীর্ঘ হচ্ছে।
শহীদুল ইসলাম নামের এক তরুণ লিখেছেন, ‘কিসের এত তাড়া ছিল ভাই, কেন এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হয়। আপনি আমাদের মাঝে নেই—বিশ্বাস করতে পারছি না। পরপারে ভালো থাকবেন।’
নিহত হাবীবের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ব্যবসায়িক কাজে বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।
রাস্তা পারাপারে এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রবিউল হোসেন বলেন, ‘হাবীবের মাথা ও মুখে গুরুতর জখম হয়। হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। আমরা ইসিজি করে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। মৃত্যু হওয়ার পরও তাঁর বন্ধুরা চট্টগ্রাম শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁকে।’
রাঙ্গুনিয়া বাইক লাভার্সের অন্যতম অ্যাডমিন ও আহসান হাবীবের বন্ধু আদনান ফাহিম বলেন, সংগঠনে খুব সক্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁর অকালে চলে যাওয়া কিছুতে মানতে পরছেন না সংগঠনের সদস্যরা।
জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মাহাবুব মিল্কি বলেন, ‘দুর্ঘটনার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’