লো-ভোল্টেজ সমস্যায় বছরে বাড়তি খরচ ১৪ লাখ টাকা
লো-ভোল্টেজের সমস্যায় ধুঁকছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার খেপুপাড়া রাডার স্টেশন। এ স্টেশনের যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য যে ভোল্টেজে বিদ্যুতের সরবরাহ দরকার, সেই ভোল্টেজ দিতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ। এতে ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে স্টেশনটি চালাতে গিয়ে প্রতিবছর অতিরিক্ত ১৪ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উপকূলের মানুষের কাছে আবহাওয়ার সংকেত পৌঁছে দেওয়া, সামুদ্রিক ঝড়ের অবস্থান, তীব্রতা, গতিবিধি, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সঠিকভাবে নিরূপণ, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সংকেত দেওয়ার লক্ষ্যে জাপান সরকারের সহায়তায় ২০০৭ সালে কলাপাড়া ও কক্সবাজারে আবহাওয়া রাডার সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এক বছরের মধ্যে কলাপাড়ায় স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করে। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটি খেপুপাড়া ঝড় সংকেতকারী রাডার ও পাইলট বেলুন অবজারভেটরি (পিবিও) স্টেশন নামে যাত্রা শুরু করে।
শুরু থেকেই বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের জন্য স্টেশনটি সচল রাখতে প্রকৌশলীদের বেগ পেতে হচ্ছে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুতের সরবরাহ করতে হয়। ঘণ্টায় ১০ লিটার করে প্রতিদিন ৭০ লিটার ডিজেল খরচ হচ্ছে। দৈনিক ৭০ লিটার খরচ হলে মাসে ২১০০ লিটার এবং বছরে ২৫ হাজার ২০০ লিটার ডিজেল পুড়ছে। এর দাম ১৪ লাখ চার হাজার টাকা। তবে দুর্যোগকালীন রাডার স্টেশনের কার্যক্রম চালানোর জন্য ২৪ ঘণ্টাই জেনারেটর চালু রাখতে হয়। তখন ব্যয় আরও বেড়ে যায়।
রাডার স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের হিসাবে পুরো রাডার স্টেশনটির জন্য ৪৪০ ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। অথচ সেখানে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ৩৯০ থেকে ৪০০ ভোল্ট। এ ভোল্টেজে স্টেশনের যন্ত্রপাতি চালানো সম্ভব হয় না।’
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পটুয়াখালী কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক হাফিজ আহমেদ জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সারাদেশে যে ভোল্টেজে (৪০০ ভোল্ট) বিদ্যুতের সরবরাহ করে, এখানে সেই ভোল্টেজেই বিদ্যুতের সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এই ভোল্টেজে রাডার স্টেশন চালানো যাচ্ছে না বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। তাঁরা স্টেশন কর্তৃপক্ষকে ভোল্টেজ কন্ট্রোলিং ডিভাইস লাগিয়ে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি উন্নীতকরণের মাধ্যমে স্টেশন চালাতে বলেছেন।
স্টেশনের প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য একটি সুপারিশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা শুনেছি, সেখান থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি করে দেওয়া হতে পারে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’