২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

লেগুনার চালকের সহকারী সেজে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ২২ জানুয়ারি মহির উদ্দিনের লাশ পাওয়া যায়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে।

মহির উদ্দিনের হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পরদিন যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক বিলাল আল আজাদ শুরু করেন লেগুনাচালকের সহকারীর কাজ
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ পরিচয় গোপন করে কখনো যাত্রী আবার কখনো লেগুনার চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করছেন তিনি। আর খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন লাল রঙের পাদানিওয়ালা একটি লেগুনা। যে লেগুনায় খুলতে পারে হত্যার জট।

২২ জানুয়ারি ভোরে রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেন এটি মহির উদ্দিনের মরদেহ। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।

মহির উদ্দিনের হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পরদিন যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিলাল আল আজাদ শুরু করেন লেগুনাচালকের সহকারীর কাজ। টানা তিন দিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, কোনাবাড়ী, ডেমরা, চিটাগাং রোড ও নারায়ণগঞ্জ রুটে কাজ করেন। পরে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেগুনা কদমতলীর পাটের বাগ এলাকার একটি গ্যারেজে সন্ধান পান।

পুলিশ বলছে, মূলত এই লেগুনার সূত্র ধরেই উদ্‌ঘাটন হয় খুনের রহস্য। গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. রুবেল, মো. রিপন, মো. মঞ্জুর ও আবদুর রহমান।

পুলিশ বলছে, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, চলন্ত এক লেগুনা থেকে কেউ ওই ব্যক্তিকে ফেলে যাচ্ছেন। কিন্তু ফুটেজে সেই লেগুনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট দেখা যাচ্ছিল না। শুধু লেগুনার পাদানিতে লাল রং ছিল, এতটুকু বোঝা যায়।

এসআই বিলাল আল আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘লেগুনাস্ট্যান্ডের পূর্বপরিচিত এক লাইনম্যানের মাধ্যমে সাইনবোর্ডে গিয়ে নিজের পরিচয় গোপন রেখে সহকারীর চাকরি নিই। পরদিন কাজ করছিলাম আর লেগুনা খুঁজছিলাম।’

পুলিশ জানায়, লেগুনা উদ্ধারের পর দুজনের নাম পাওয়া যায়। তাঁরা বিভিন্ন স্ট্যান্ডে আর বিভিন্ন গ্যারেজে থাকেন। কিন্তু দুই-তিন দিন ধরে তাঁদের পাওয়া যাচ্ছে না। একপর্যায়ে জানা যায়, লেগুনার চালক মঞ্জুরের সহকারী এখন বাসে কাজ করেন। চালকের সহকারীকে আটক করা গেলেও মঞ্জুরকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। স্থানীয় লোকজন জানান, মঞ্জুর ছুটিতে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে গেছেন। এতে সন্দেহ বাড়ে। রাতেই মঞ্জুরের গ্রামের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে জানা যায় তিনি অন্য মঞ্জুর। এরপর ঢাকায় খোঁজাখুঁজি করে ২৬ জানুয়ারি রাতে সাইনবোর্ড স্ট্যান্ডে কাকতালীয়ভাবেই পাওয়া যায় মঞ্জুরকে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় রিপন আর রুবেলকে।

পুলিশ সূত্র জানায়, যাত্রী মাহির উদ্দিন সাদ্দাম মার্কেট এলাকা থেকে লেগুনায় ওঠেন। লেগুনা ফ্লাইওভার উঠলে ওই চার ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে ৫ হাজার ৯০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর তাঁকে চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দিলে তিনি মারা যান।