২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

লাঙ্গলের পাশে নেই আ.লীগ

নাসরিন জাহান রত্না,আবুল হোসেন খান
নাসরিন জাহান রত্না,আবুল হোসেন খান

বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী নাসরিন জাহান রত্নার হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে প্রার্থী আবুল হোসেন খানের পক্ষে একসঙ্গে মাঠে নেমেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, এই আসনে আওয়ামী লীগ এবার তাঁদের দলীয় প্রার্থী দেয়নি। মহাজোটের শরিক জাপাকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ হন। এরপর ২০১৪ সালে তিনি পটুয়াখালী-১ (সদর) আসন থেকে মনোনয়ন নিয়ে সাংসদ হন এবং তাঁর স্ত্রী নাসরিন জাহান এই আসনে মহাজোটের মনোনয়ন পান।
ওই দুটি নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ উদ্দীন মল্লিককে মনোনয়ন দেওয়া হলেও পরে মহাজোটের কারণে আসনটি ছাড় দিতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ। এসব কারণে হাফিজ উদ্দীন মল্লিক এবার শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন জমা দেননি। এসব কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অভিমান রয়েছে। তাই প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েক দিন পার হলেও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অনেকে লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নামেননি।
এই আসনে জাতীয় পার্টি ছাড়াও মহাজোটের আরেক শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (ইনু) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মো. মোহসীন মশাল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা জাপার সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এটা একটা গুজব। অধিকাংশ নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে আছেন। কেবল দুজন চেয়ারম্যান এখনো নামেননি। আশা করি তাঁরাও নামবেন।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র লোকমান হোসেন বলেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-অভিমান রয়েছে। কারণ, এই আসনে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক রয়েছে। কিন্তু মহাজোটের স্বার্থে এই আসনে আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী দেওয়া যাচ্ছে না। এই ক্ষোভের কারণে মূলত দলীয় নেতা-কর্মীরা লাঙ্গলের পক্ষে নামছেন না। তবে ধীরে ধীরে সবাই মাঠে নামবেন। তিনি ও উপজেলা সভাপতি কৌশলগত কারণে এখনো নামেননি। যেহেতু নেত্রী জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাই তাঁর পক্ষে তো নামতেই হবে।
অপর দিকে বিভক্ত উপজেলা বিএনপির নেতারা দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছেন। বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ আবুল হোসেন খানের সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিকদারের বিরোধ ছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার আবুল হোসেন খান ও খলিলুর রহমান সিকদারের পক্ষের নেতাদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিরোধ মিটিয়ে উভয় পক্ষ ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে উপজেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।
খলিলুর রহমান বলেন, বাকেরগঞ্জ বিএনপিতে এখন কোনো বিভক্তি নেই। ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছে। উপজেলা কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এখন আর কোনো বিরোধ নেই। সবাই আন্তরিকভাবে মাঠে কাজ করছে।
এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নুরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) খন্দকার মাহাতাব উদ্দিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) এ কে এম নুরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী তালুকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।