লতিফুর রহমানের জীবন-মূল্যবোধ নিয়ে ওয়েবসাইট
শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন উদ্যোক্তা লতিফুর রহমান। মূল্যবোধ, কঠোর পরিশ্রম আর সততা দিয়ে তিনি হয়েছেন সফল। শত বাধা, কণ্টকময় সময় পেরিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্যবসাসফল এক শিল্পগোষ্ঠী, পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। দেশের দুটি স্বাধীন গণমাধ্যমও তৈরি করেছেন তিনি। এ বর্ণাঢ্য জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তুলে ধরতে চালু হলো লতিফুর রহমানের নামে একটি ওয়েবসাইট।
আজ শনিবার ট্রান্সকম গ্রুপ ও মিডিয়াস্টার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত লতিফুর রহমানের ৭৬তম জন্মদিন। দুপুর ১২টার দিকে অনলাইনে এক অনুষ্ঠানে তাঁর নামে ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করা হয়। প্রথম আলোর উদ্যোগে এ (https://www.latifurrahman.com/) ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে।
ওয়েবসাইটটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন লতিফুর রহমানের বড় মেয়ে ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান। তিনি বলেন, ‘আব্বুর কাছে স্মৃতি ধরে রাখা, ডকুমেন্টেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি সুযোগ পেলেই ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতেন, মঞ্চনাটকের টিকিট, ব্রোশিয়ার জমা করে রাখতেন, চিঠি স্ক্যান করে রাখতেন। তিনি বলতেন, একদিন এগুলো কিছুই থাকবে না, আমরা সবাই চলে যাব, থেকে যাবে শুধু স্মৃতিগুলো।’
সিমিন রহমান বলেন, ‘আমি আগে বুঝতাম না কেন উনি এগুলো বলতেন। এখন বুঝি, স্মৃতি কত গুরুত্বপূর্ণ। এসব স্মৃতির মধ্য দিয়ে আমরা তাঁকে স্মরণ করি। এ ওয়েবসাইটটি যাঁরা তাঁকে চেনেন শুধু তাঁদের জন্য নয়, অপরিচিত যেকোনো মানুষকে উৎসাহ দেবে বলে আমার আশা।’ পরবর্তী প্রজন্মের শিল্প উদ্যোক্তারা তাঁর ব্যবসা ও মূল্যবোধ সম্পর্কে জানতে পারবেন বলে সিমিন রহমানের প্রত্যাশা।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘লতিফুর রহমান আমাদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এখনো তিনি আমাদের মনের গভীরে আছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে এখনো আছেন। কারণ, প্রথম আলোর সব সফলতার সঙ্গে তিনি ছিলেন, এখনো আছেন।’
মতিউর রহমান বলেন, ‘তাঁর (লতিফুর রহমান) ভাবনা ছিল বাংলাদেশ একটি সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত হবে এবং সে জন্য বাংলাদেশে শক্তিশালী, স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রয়োজনয়ীতা রয়েছে। সে ভাবনা থেকেই ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে তাঁর যুক্ততা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘লতিফুর রহমানের ভূমিকা, প্রেরণা সব সময় আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। এই ওয়েবসাইটের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসাপূর্ণ উপহার উপস্থাপন করলাম। আমাদের সব কাজে লতিফুর রহমানের আদর্শ, লক্ষ্য, নৈতিকতা সমুন্নত রাখব, মনে রাখব, সব কাজে এর প্রতিফলন থাকবে।’
২০১৭ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড পেপসিকোর ‘গ্লোবাল বটলার অব দ্য ইয়ার ২০১৬ অ্যাওয়ার্ড’ পায়। স্বীকৃতি প্রদান করা সেই অনুষ্ঠানে লতিফুর রহমানের একটি বক্তব্যে ভিডিও ক্লিপ, লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের ওপর নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘ছোটু’ ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, লতিফুর রহমানের সমগ্র জীবনের যতগুলো ক্ষেত্র ছিল তারই একটি ছাপ উপস্থাপিত হয়েছে এ ওয়েবসাইটে। পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে কেউ লতিফুর রহমান সম্পর্কে জানতে চাইলে এ ওয়েবসাইটে পাবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে সফল হওয়া যায়, তার উদাহরণ লতিফুর রহমান। নতুন প্রজন্মের শিল্প উদ্যোক্তারা এখান থেকে অনুপ্রেরণা পাবেন। লতিফুর রহমানের এ ওয়েবসাইটে আছে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী। আরও আছে তাঁকে নিয়ে লেখা, ছবি, ভিডিও, স্বীকৃতি ও উদ্যোগ।