র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে অনেকেই অতিরঞ্জিত করে দেখছেন: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে অনেকেই অতিরঞ্জিত করে দেখছেন। কারণ, দুই দেশের সম্পর্কে এত বিস্তৃত ও ব্যাপক বিষয় নিয়ে সহযোগিতা রয়েছে, যেখানে এটি মাত্র একটি ইস্যু।
মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিটার হাস এ কথা বলেছেন। আজ সোমবার প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে তিনি দুই দেশের সম্পর্ক, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও খোলাখুলি কথা বলেছেন। ভয়েস অব আমেরিকার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আনিস আহমেদ।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে পিটার হাস বলেন, এটা স্পষ্ট, যেমনটি প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। কাজেই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং এর সঙ্গে র্যাবের সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ নিয়ে উদ্বেগের কারণে ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবকে যেকোনো ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটা ঠিক যে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব (দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর) আছে। সেটা আমরাও লক্ষ করেছি। র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে অনেকেই অতিরঞ্জিত করে দেখছেন। কারণ, দুই দেশের সম্পর্ক এত বিস্তৃত ও এত ব্যাপক বিষয় নিয়ে সহযোগিতা রয়েছে, যেখানে এটি মাত্র একটি ইস্যু। আমরা চাই, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত হোক। র্যাবের সংস্কার হোক। যাতে করে ভবিষ্যতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে পিটার হাস বলেন, ‘গতিশীল গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে বাংলাদেশে গণমাধ্যম চাপে রয়েছে। গণমাধ্যমসংক্রান্ত প্রস্তাবিত কিছু আইন সাংবাদিকদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন ও বিপজ্জনক করে তুলতে পারে। স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া অবাধ ও মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। গণমাধ্যম যে প্রশ্ন করতে চায়, তা করার সুযোগ পাবে না। যা লিখতে চায়, তা লিখতে পারবে না, সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না। কোনো ভুল হচ্ছে দেখলে সরকারের সমালোচনা করার অধিকার থাকতে হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার আগে এটা গুরুত্বপূর্ণ। সক্রিয় গণমাধ্যম ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আপনি নিজেই জানেন, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক রাজনীতিবিদ ও জনগণ গণমাধ্যমকে পছন্দ করে না। কারণ, গণমাধ্যম তাদের ঘাম ঝরিয়ে ছাড়ে।’