রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরাতে বাংলাদেশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের এক বছর উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কমিশনের কার্যালয়ে এর আয়োজন করা হয়।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে একটি চুক্তি প্রয়োজন ছিল, তাই চুক্তি হয়েছে। কিন্তু এই চুক্তির বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যের দৃষ্টিকোণ দেখে আমরা হতাশ। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরও কার্যকর ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করেনি। এটা বলতে পারি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশকে আরও সক্রিয় হতে হবে।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনা কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের বিষয়ে আমরা গত বছরের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি দিই। ১৫-২০ দিন পর তারা চিঠির উত্তর দেয়। তাদের উত্তর আমাদের কাছে ইতিবাচক মনে হয়েছিল। তবে এর কয়েক দিন পর তারা নিজেদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, মিয়ানমারের জঙ্গিদের দায়-দায়িত্ব তারা নেবে না।’
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সাত দফা সুপারিশ তুলে ধরেন । এর মধ্যে আছে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫ দফা সুপারিশের বাস্তবায়ন, সরকারের শক্ত পদক্ষেপ, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাফার জোনে রোহিঙ্গাদের রাখার ব্যবস্থা, হত্যা-ধর্ষণে যুক্ত মিয়ানমারের সেনাসদস্যদের বিচার, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের বিচার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকার সুপারিশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী ও মেঘনা গুহঠাকুরতা বক্তব্য দেন।