রোজিনা ইসলামের জন্য ১৫ সংগঠনের বিবৃতি
প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে চলমান মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ১৫টি আন্তর্জাতিক সংগঠন। তারা বলেছে, খ্যাতিমান এই বাংলাদেশি অনুসন্ধানী সাংবাদিক ‘সেরা অদম্য সাহসী’ হিসেবে ২০২১ সালের ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তাঁর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
গত বছর রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা অফিশিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা চলতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে রোজিনা ইসলামের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানায় তারা।
সংগঠনগুলো হলো নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড, আর্টিকেল নাইনটিন, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস, দ্য কোয়ালিশন ফর উইমেন ইন জার্নালিজম (সিএফডব্লিউআইজে), সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন, দ্য আফ্রিকা ওমেন জার্নালিজম প্রজেক্ট (এডব্লিউজেপি), রুরাল ডিজিটাল ইয়ুথ রেজিলিয়েন্সি প্রজেক্ট (আরডিওয়াইআর), যুক্তরাষ্ট্রের মিজ ম্যাগাজিন, পেন আমেরিকা, ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট (আইপিআই), মিডিয়া ফাউন্ডেশন ফর ওয়েস্ট আফ্রিকা (এমএফডব্লিউএ), মিডিয়া গার্ড অ্যাসোসিয়েশন, দ্য স্টেজ মিডিয়া–লাইবেরিয়া, পিআরএএনটিও–অ্যা হাউস অব কনসালট্যান্টস ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে এসব সংগঠন। গত শুক্রবার তাদের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের দুর্নীতি ও মহামারি মোকাবিলার অব্যবস্থাপনা নিয়ে জনস্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের ও প্রতিবেদন করেছেন রোজিনা ইসলাম। ২০২১ সালের ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তাঁকে আটক করা হয়। সেখানে তাঁকে ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যে আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই অফিশিয়াল সিক্রেটস আইন ঔপনিবেশিক আমলের। এটি বর্তমান যুগের উপযোগী নয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, এই আইনের কিছু ধারা বাংলাদেশের সংবিধানে থাকা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তথ্য সংগ্রহ, তথ্য পাওয়া অধিকার জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলেও এই আইন তাকে বাধাগ্রস্ত করে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের একটি আইনের ব্যবহার রোজিনা ইসলামের কণ্ঠ রোধের চেষ্টা হিসেবেই প্রতীয়মান হয়।
এই আইনের অপব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো। তারা বলেছে, হয় এই আইন বাতিল করতে হবে অথবা আন্তর্জাতিক আইন ও মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটা সংশোধন করতে হবে।