রোগীর শরীর থেকে কিডনি অপসারণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজকে। একই সঙ্গে রোগীকে সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে নাটোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম-২–এর বিচারক সামশুল আল আমিন এ আদেশ দেন। আগামী ৬ মার্চ রোগীকে পরীক্ষা করে ৩০ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।
৮ ফেব্রুয়ারি রোগীর শরীর থেকে কিডনি অপসারণের অভিযোগে তিন চিকিৎসকসহ নাটোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে রোগীর স্বামী ফজলু বিশ্বাস আদালতে মামলা করেন ।
বাদী ফজলু বিশ্বাস সিংড়া উপজেলার ছোট চৌগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী আছমা বেগমকে (৫০) নাটোরের জনসেবা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে কর্তব্যরত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) এম এ হান্নান তাঁর মূত্রনালি ও কিডনির পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন চিকিৎসক আমিরুল ইসলামসহ দুই চিকিৎসক ও পরিচালক রফিকুল ইসলাম। অস্ত্রোপচারের পর আছমা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে জানা যায়, তাঁর ডান দিকের কিডনিটি নেই।
আদালত ওই দিন মামলাটি গ্রহণ করে আজ রোগীকে চিকিৎসার কাগজপত্রসহ সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে রোগীকে নিয়ে বাদী আজ আদালতে হাজির হলে আদালত কাগজপত্র পরীক্ষা করে আগামী ৬ মার্চ রোগীকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানকে কিডনি না থাকা–সংক্রান্ত অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে ৩০ মার্চের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেন।
আদালতের পেশকার জয়ন্ত কুমার আদালতের নির্দেশনার কথা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত আসামিদের ব্যাপারে পরবর্তী আদেশ দেবেন।
সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) এম এ হান্নান তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, রোগীর লোকজন অজ্ঞতাবশত শুধু ধারণা করে মিথ্যা মামলা করেছেন। তিনি আশা করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করবে।
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি দুঃখজনক বলে বিবৃতি দিয়েছেন রাজশাহী ও নাটোর জেলার বিএমএ নেতারা। তাঁরাও দাবি করেছেন, বাদীর অভিযোগটি বিজ্ঞানসম্মত নয়। এটা শুধু হয়রানিমূলক ও অপমানজনক ঘটনা।
আরও পড়ুন: