২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কয়েক গুণ কার্বন নিঃসরণ হয় সিমেন্ট ও বিস্কুট কারখানায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
ছবি: প্রথম আলো

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ ঘটবে, তার চেয়ে সেখানকার সিমেন্টসহ অন্য কারখানাগুলো থেকে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কয়েক গুণ বেশি। অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা এই প্রকল্পে কার্বন নিঃসরণ অনেক কম। প্রকল্পটি নিয়ে অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
আজ শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন অংশগ্রহণ এবং তারপর প্যারিসে আনুষ্ঠানিক সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রোববার সকালে ঢাকা ছাড়ছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ার কথা ছিল। আমরা সেগুলো বাতিল করেছি। পৃথিবীর এটা দেখা উচিত। এতে আমাদের ১২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নষ্ট হলো। আরও ছয়টি কেন্দ্র যেগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল, সেগুলোও নাকচ করে দিয়েছি। পৃথিবীকে বাঁচাতে আমরা এ রকম বড় উদ্যোগ নিয়েছি। অন্যদেরও এটি দেখা উচিত। আমরা চাই অন্যান্য দেশও আমাদের অনুসরণ করবে।’

এতগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হলো, রামপাল হলো না কেন, এই প্রশ্ন করা হয়েছিল আব্দুল মোমেনকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘রামপালের বিষয়ে বলি, এটা অত্যন্ত অত্যাধুনিকভাবে তৈরি করা হয়েছে। এর যে ধোঁয়া, এটি ২০০ ফুট ওপরে যায়; পয়েন্ট জিরো টু পারসেন্ট, যেটি অত্যন্ত কম কার্বন নিঃসরণ। ভয়টা হচ্ছে যখন কয়লাটা আনবে, সেটা যদি কোনোভাবে নদীতে পড়ে যায়, তখন দূষণ হতে পারে।

সেখানে যে সিমেন্ট ফ্যাক্টরি আছে, বিস্কুট ফ্যাক্টরি আছে, সেগুলো যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, তা রামপালের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি করে। সুতরাং রামপাল নিয়ে হইচই বেশি হয়। আসলে এটা নিয়ে অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদের তীর ঘেঁষে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। শুরু থেকেই পরিবেশবাদীরা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁদের দাবি, যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে তা মারাত্মক দূষণ করবে। সরকার বলে আসছে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করে আলট্রা সুপার প্রযুক্তির মাধ্যমে কম কয়লা ব্যবহার করে রামপালের প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

২০১৪ সালে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আগামী ডিসেম্বরে দুটি ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটিতে উৎপাদন শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন।

২০১৬ সালে ইউনেনকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি (ডব্লিউএইচসি) রামপাল প্রকল্পের পরিবেশগত মূল্যায়নের পর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোনো বৃহত্তর শিল্প ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা উচিত নয় বলে বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিল।