রাজীবপুর সীমান্তের ওপারে হাতির মৃত্যু
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা মিয়াপাড়ার সীমান্তের ওপারে গতকাল সোমবার ভোরে একটি বুনো হাতি মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতিটি মারা গিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিয়াপাড়া গ্রামবাসী বলছেন, ভারতের দেওয়া কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে টানা বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতিটি মারা পড়ে থাকতে পারে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের দাবি, বৈদ্যুতিক ফাঁদ তৈরি করে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বিএসএফ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় ৩০-৪০টি ভারতীয় বুনো হাতির দল ১০৭২ নম্বর সীমান্ত পিলারের পাশ দিয়ে রাজীবপুরের মিয়াপাড়া ও বাউলপাড়ায় ঢোকে। হাতির দলটি গ্রাম দুটির প্রায় ১০০ একর জমির ভুট্টা ও গমখেত নষ্ট করে। রোববার ভোরে সেগুলো ভারতের কালাইয়ের চর এলাকায় ফিরে যায়। সেদিন সন্ধ্যায়ও গ্রামবাসী ও বিজিবির সদস্যরা হাতির দলটিকে কালাইয়ের চরে দেখতে পান। গতকাল সোমবার সকালে একটি হাতিকে মিয়াপাড়া সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড থেকে ১০ হাত দূরে ভারতীয় অংশে মৃত পড়ে থাকতে দেখা যায়।
মিয়াপাড়া গ্রামের আবদুর রশিদ বলেন, ‘কাঁটাতারের সাথে ভারত বিদ্যুতের লাইন দিছে। হেই তারে লাইগা হাতি মারা যাবার পারে। হ্যারা খুঁটির মধ্যে গাও ঘষে। তার ছিঁড়া হাতির গায়ে লাগতে পারে। হাতি ভারতের পাহাড় থেকে প্রায়ই বাংলাদেশে আসে। আসার সময় বিএসএফ গেট খুইলা দেয়। সারা রাত ভুট্টা আর গম খ্যাত নষ্ট কইরা ভোরে চইলা যায়। ভয়ে রাইতে ঘুম আইসে না। গ্রামবাসী জাগনা থাকি।’
মিয়াপাড়া সীমান্তের ওপারে ভারতের বালুরঘাট বিএসএফ ক্যাম্পের কয়েকজন সদস্য বলেন, বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে। এর প্রমাণ হাতিটির পুড়ে যাওয়া শুঁড়। হাতিটির কানও কেটে নেওয়া হয়েছে।
ভারতের কালাইরচর বিএসএফ ক্যাম্পের পরিদর্শক জেন্টালি বিসওয়াস বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসে তদন্ত করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রৌমারী ও রাজীবপুর অঞ্চলের বন কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, হাতিটিকে মারা হয়েছে। হাতির শুঁড় পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। কারা এ কাজটি করেছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
৩৫ বিজিবির বালিয়ামারী সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার মোরশেদুল হক বলেন, ‘যেহেতু মারা যাওয়া হাতিটি নো ম্যান্স ল্যান্ডে, সে কারণে আমরা কিছু বলতে পারছি না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন তালুকদার বলেন, হাতিটিকে মারা হয়েছে না অন্য কারণে মরেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।