মৌলভীবাজারে করোনাকালে কিস্তি আদায় স্থগিত রেখেছে ব্র্যাক

করোনাকালে মৌলভীবাজারে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রেখেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। করোনা পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন মানুষকে সহায়তা ও করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে আরও নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে আছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঋণ বিতরণ, চা-শ্রমিকদের মধ্যে খাদ্যসহায়তা প্রদান, গ্রাহকদের মধ্যে সাবান বিতরণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা।

ব্র্যাকের কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে ব্র্যাক মৌলভীবাজার জনসাধারণকে সচেতন করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পালন করে আসছে। এসব কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেসরকারি এই সংস্থার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (দাবি) গোলাম রাব্বানী ও মৌলভীবাজার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (দাবি) শংকর কুমার কুণ্ডু। কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ এবং গ্রাহকদের মধ্যে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রচারপত্র বিতরণ, মাইকিং ও বিভিন্ন স্থানে সাবান–পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা। ব্র্যাকের ৯৩৬ জন গ্রাহকের মধ্যে দুটি করে সাবান এবং দুটি করে হারপিক পাউডার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে করোনাকালে হিমশিম খাচ্ছে সারা দেশের ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ। তাদের অনেকেই কোনো না কোনো ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স মৌলভীবাজারে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে সব ধরনের কিস্তি এবং সঞ্চয় আদায় গত ২৪ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত করেছে। এ ছাড়া গত ১০ মে থেকে সাধারণ জনগোষ্ঠীর আর্থিক প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে কৃষি খাত, মুদি দোকান এবং ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমিত আকারে ঋণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, ব্র্যাক ইউপিজি কর্মসূচি থেকে ১ হাজার ৯৫৪টি পরিবারকে, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি থেকে ১ হাজার ৮টি পরিবারকে, এইচআরএলএস কর্মসূচি থেকে ১৬০টি পরিবারকে ও সিইপি কর্মসূচি থেকে ১৩৩টি পরিবারকে এককালীন ১ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলার শমসেরনগর চা-বাগানে ব্র্যাকের অর্থায়নে পেপসিকোর সহায়তায় ২০০টি পরিবারকে এক মাসের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। এই কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেন ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী অরুণ কুমার দাস।

ব্র্যাকের মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক (দাবি) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’

এলাকা ব্যবস্থাপক (দাবি) মো. কামরুল হাছান বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে এই ভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রান্তিক এবং দরিদ্র জনগণের কথা বিবেচনা করে আমরা মাঠপর্যায়ে কোনো কিস্তি আদায় না করে তাদের পাশে থেকে সমস্যা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’