মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি
চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নানা রকম তথ্য দেওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়। দেশি–বিদেশি গণমাধ্যমগুলো এ কারণে মৃতের আলাদা আলাদা সংখ্যা প্রকাশ করে। দুর্ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. জাবেদ পাটোয়ারী। সেখানে তিনি মৃতের সংখ্যা ‘অন্তত ৭০’ বলে উল্লেখ করেন। এরপরই বিভিন্ন গণমাধ্যম সারা দিন তা প্রকাশ করে।
তবে সবকিছু উল্টে যায় রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক প্রতিবেদন আসার পর। এ ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মফিজুল হককে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটি তাদের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার বিকেলে দাখিল করে। প্রতিবেদনের একটি সারসংক্ষেপ রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, এ ঘটনায় ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে সাতজন নারী ও পাঁচটি শিশু রয়েছে।
কিন্তু ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সেলিম রেজা বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের জানান, মৃত্যের সংখ্যা ৬৭। ঢাকা মহানগর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও রাতে একই তথ্য দেয়। এর আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিন্ন তথ্যের কারণে বেশির ভাগ পত্রিকার প্রথম সংস্করণে মৃতের সংখ্যা ৭৮ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে নগর সংস্করণে তা সংশোধন করা হয়।
এই সংখ্যার ব্যাপারে গতকাল রাতে জানতে চাওয়া হলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মফিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল থেকে এই তথ্য নেওয়া হয়েছিল। তারা হয়তো একজনকে একাধিকবার গণনা করেছিল। এ কারণে বিভ্রান্তিটা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এই বিভ্রান্তি যে শুধু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে হয় তা নয়, বিদেশি সংবাদমাধ্যমেও তা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমস–এর খবরে মৃতের সংখ্যা ১১০ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, মৃতের সংখ্যা ৮০। ফায়ার সার্ভিসের প্রধান আলী আহমদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিবিসির ইংরেজি বিভাগে মৃতের সংখ্যা ৭৮ বলা হয়। বাংলা বিভাগেও একই তথ্য দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৭০ বলে উল্লেখ করা হয়। বার্তা সংস্থা এএফপিও একই সংখ্যা প্রকাশ করে।