‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নেপালের প্রেসিডেন্ট ঢাকায়
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি আজ সোমবার সকালে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর এই ঢাকা সফর।
নেপালের প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী নেপাল এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি সকাল ১০টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিমানবন্দরে নেপালের প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানান। ২১ বার তোপধ্বনির পর বিমানবন্দরে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সফরসূচি অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকে নেপালের প্রেসিডেন্ট সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন। তিনি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সেখানে তিনি দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। পরে একটি চারাগাছ রোপণ করবেন।
আজ বিকেলে নেপালের প্রেসিডেন্ট সম্মানিত অতিথি হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ষষ্ঠ দিনের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন বিদ্যা দেবী ভান্ডারি।
নেপালের প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গীদের মধ্যে পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী প্রদীপ কুমার গিয়াওয়ালি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা রয়েছেন।
ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্র সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, সংযুক্তি বাড়ানোসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে, নতুন উচ্চতায় নেবে।
সফরসূচি অনুযায়ী, বিদ্যা দেবী ভান্ডারি আজ রাতে বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করবেন। ওই আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।
বিদ্যা দেবী ভান্ডারি কাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন। সেখানে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে ১৭ মার্চ থেকে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে ২৬ মার্চ পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানের মূল থিম ‘মুজিব চিরন্তন’। তবে বিভিন্ন দিনের অনুষ্ঠানের পৃথক থিম থাকছে।
‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ১৭ মার্চ ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। দ্বিতীয় বিশ্বনেতা হিসেবে ১৯ মার্চ ঢাকায় আসেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তৃতীয় বিশ্বনেতা হিসেবে আজ এলেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। এটা নেপালের প্রেসিডেন্টের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ২৪ ও ২৫ মার্চ ঢাকা সফর করবেন। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৬ মার্চ ঢাকায় আসবেন।