‘মুক্তিযোদ্ধা’ সংজ্ঞা নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সংজ্ঞা নির্ধারণ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূল সংজ্ঞার সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সংজ্ঞা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে কেন তা বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে ‘লাল মুক্তিবার্তা’, অন্যান্য অননুমোদিত দলিলাদি এবং বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত সংজ্ঞার ভিত্তিতে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। আইনসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পন্থায় ঘোষিত ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সংজ্ঞা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সংজ্ঞার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ উল্লেখ করে এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২১ জুন ওই রুল দেন। আদেশের বিষয়টি সম্প্রতি জানা গেছে।
নরসিংদীর বাসিন্দা এম আবেদ আহমেদসহ পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওই রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আমলে ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুসারে তিন বাহিনীর বাইরে সাধারণ নাগরিক যাঁরা কোনো না কোনো বাহিনীর অধীনে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধা হবেন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ওই সংজ্ঞা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পন্থায় পরিবর্তন করা হয়। এর মাধ্যমে যাঁরা যোদ্ধা হিসেবে অংশ নেননি, তাঁদেরও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই–বাছাইয়ের জন্য “লাল মুক্তিবার্তাকে” প্রশ্নের ঊর্ধ্বে দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অথচ লাল মুক্তিবার্তার আইনগত কোনো অনুমোদনও নেই। কারণ, এটি কোনো সরকারি প্রকাশনা নয়—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন।’