মুক্তামণির বায়োপসির জন্য নমুনা সংগ্রহ

রক্তনালির বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণির বায়োপসির জন্য অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হাতের টিউমারের অংশবিশেষ সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় এ অস্ত্রোপচার শেষ হয়।

তবে অস্ত্রোপচারের প্রায় এক ঘণ্টা পর অস্ত্রোপচারের জায়গা থেকে রক্তপাত শুরু হলে আবার অস্ত্রোপচারকক্ষে নিয়ে নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম হোসেনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন চিকিৎসকেরা। সকাল ১০টার দিকে অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার পরপরই তার জ্ঞান ফেরে। তাকে এখন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ তাকে কেবিনে দেওয়া হবে। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে আটজন চিকিৎসক অস্ত্রোপচারে অংশ নেন। চারজন ছিলেন অবেদনবিদ।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কথা হয় মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম হোসেনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়ে এখন ভালো আছে। হাত থেকে রক্ত পড়া থেমেছে। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’

গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, মুক্তামণির ডান হাত অক্ষত রেখেই যাতে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়, চিকিৎসকেরা প্রথমে সে চেষ্টা করবেন। তবে তা সম্ভব না হলে হাত কেটে হলেও অস্ত্রোপচার করতে হবে। কেননা, অস্ত্রোপচার না করলে তার মৃত্যুঝুঁকি আছে। মুক্তামণির বাবা-মা মেয়ের হাত কেটে ফেলতে হলেও অস্ত্রোপচারে সম্মতি দিয়েছেন। তাঁদের কাছে মেয়ের হাতের চেয়ে জীবন আগে।

বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর মুক্তামণির অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়েছিল। তবে সে এখন ভালো আছে।’

সাতক্ষীরায় জন্মের দেড় বছর পর থেকে মুক্তামণির ডান হাতের সমস্যার শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তার ডান হাতটি ফুলে অনেকটা কোলবালিশের মতো হয়ে যায়। সে বিছানাবন্দী হয়ে পড়ে। মুক্তামণির রোগ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুলাই মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। বিনা মূল্যে তার চিকিৎসা চলছে।