আকাশে দুটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানে থাকা চার বৈমানিককেই জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁরা আশঙ্কামুক্ত। চার বৈমানিকই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ আরও ছয়জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল রাশিদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ বিএএফ বেস জহুর থেকে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিমান দুটি বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমান দুটির সঙ্গে রাডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে বিমানে থাকা চারজন বৈমানিককে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। তাঁরা সবাই আশঙ্কামুক্ত।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি বিকট একটা শব্দ শুনতে পান। এর মিনিট দুয়েকের মাথায় বিমান বিধ্বস্ত হয়। সংঘর্ষের কারণে বিমান দুটি বিধ্বস্ত হতে পারে। একটি বিমান মহেশখালীর পুটিবিলায় এবং অন্যটি ছোট মহেশখালী মাইজপাড়া পাহাড়ি এলাকার পানের বরজে বিধ্বস্ত হয়।
মহেশখালীতে ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধীমান বড়ুয়া বলেন, পুটিবিলার বিমানের আগুন নেভাতে তাঁদের প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তাঁরা বিমানটি বিমানবাহিনীর কাছে বুঝিয়ে দেবেন।
মাইজপাড়ায় বিধ্বস্ত বিমানটি পাহাড়ে ঢুকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা শুধু বিমানটির ডানা দুটি দেখতে পেয়েছেন।
মহেশখালীর পুটিবিলার বাসিন্দারা বলেন, সন্ধ্যার দিকে তাঁরা হঠাৎ আকাশে কিছু একটা জ্বলতে দেখেন। এর একটু পরেই বিমানটি আবদুল কাদিরের দুই কক্ষের বাড়িতে আছড়ে পড়ে। ওই কক্ষে থাকা দুই ভাইবোন সুরভী (১৪) ও ফয়সাল (১০) আহত হয়। আহত হন জিয়াউর রহমান (৩৯), মোহাম্মদ হাসান (১৮) নুরুন্নাহার (৩০) ও তিন পথচারী। উদ্ধার অভিযান চলার সময় আহত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আরিফ উল্লাহ (৩০)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ছয়জন চিকিৎসা নিয়েছেন। মাথা ও হাতে আঘাত নিয়ে চিকিৎসাধীন আছে দুই ভাইবোন।
ইয়াক-১৩০ মডেলের যুদ্ধবিমান ১৯৯৬ সালে প্রথম আকাশে উড্ডয়ন করে। এরপর ২০০২ সালে একে রুশ সামরিক পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রধান আকাশযান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ হয়েছে, তার আওতায় ২০১৫ সালে বিমানগুলো কেনা হয়। রাশিয়ার সমরাস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইরকুত করপোরেশন এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান নির্মাণ করে থাকে। এই যুদ্ধবিমান মৌলিক ও যুদ্ধ প্রশিক্ষণের জন্য উপযোগী। পাশাপাশি একে আক্রমণের কাজেও ব্যবহার করা যায়।