২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মধুর ক্যানটিনে যেভাবে সময় কাটল ছাত্রদলের

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় নয় বছর পর আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে যান ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: শুভ্র কান্তি দাস
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় নয় বছর পর আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে যান ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: শুভ্র কান্তি দাস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় নয় বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে যান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। আজ বুধবার সকালে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী মধুর ক্যানটিনে যান। পরে সেখানে যান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ নেতাও। সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত মধুর ক্যানটিনে অবস্থান করেন তাঁরা।

ডাকসু নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও তাদের অবস্থান জানাতে মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। ডাকসু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নির্মাণে নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দেওয়া, হলের পরিবর্তে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করাসহ যে সাত দফা দাবিতে তারা উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছিল, সেগুলোই পুনর্ব্যক্ত করে সংগঠনটি। এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল বাতিল করে পুনঃ তফসিল দাবি করে ছাত্রদল।

সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মধুর ক্যানটিনে ঢোকেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ। ছাত্রদলের মধুর ক্যানটিনে যাওয়ার খবর পেয়ে আগে থেকেই মধুর ক্যানটিনে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধুর ক্যানটিনে স্বাগত জানান।

মধুর ক্যানটিনে তখন ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সহসভাপতি তুহিন কান্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা। তাঁদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতা। এরপর কয়েকটি টেবিল একসঙ্গে করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মধুর ক্যানটিনে বসেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের তিন দিক থেকে ঘিরে বিরতিহীনভাবে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

বেলা ১১টা ২০ মিনিটে মধুর ক্যানটিনে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। আর ১২টার দিকে যান কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের চার শীর্ষ নেতাকে উদ্দেশ করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘অছাত্রদের আস্তানা, ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি, ছাত্ররাই করবে’, ‘বয়স যাদের পঁয়তাল্লিশ, ক্যাম্পাসে কেন ঘুরিস?’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাও ‘খালেদা জিয়া, জিয়া খালেদা’ বলে পাল্টা স্লোগান দেন। একপর্যায়ে ছাত্রদলের এক নেতা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে ‘আমাদের ক্যাম্পাস, আমরাই থাকব’ বলে স্লোগান দিতে গেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘চুপ করে বসে চা খাও।’

সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে তাঁদের নতুন যাত্রা শুরু হলো। এখন থেকে ক্যাম্পাসে তাঁদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। আর রাজিব আহসান বলেন, তাঁদের দাবি মানতে তাঁরা প্রশাসনকে বাধ্য করার চেষ্টা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা দেখেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচনে যাবেন কি না।

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মধুর ক্যানটিন আমাদের আবেগের জায়গা। অনেক দিন পর এখানে এলাম। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে কিছুটা সহযোগিতার মনোভাব আমরা পেয়েছি। তবে আমাদের প্রতি যেসব আক্রমণাত্মক বক্তব্য তাঁরা রেখেছেন, সেগুলো না হলে আরও ভালো হতো। এখন থেকে আমরা নিয়মিত ক্যাম্পাসে, মধুর ক্যানটিনে আসব।’