মডেল রাউধার অর্ধগলিত লাশে দাগ বোঝা যায়নি!

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফের মরদেহ করব থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে ছবিটি তোলা। ছবি : শহীদুল ইসলাম
দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফের মরদেহ করব থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে ছবিটি তোলা। ছবি : শহীদুল ইসলাম

রাজশাহীতে মালদ্বীপের মডেল ও মেডিকেল শিক্ষার্থী রাউধা আথিফের মৃত্যুর ২৭ দিন পর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার সকালে রাজশাহী নগরের হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলনের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ছিলেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিরুল হোসেন চৌধুরী। অন্য দুই সদস্য সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব হাফিজ ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান।

দুপুর সোয়া ১২টা থেকে প্রায় বেলা তিনটা পর্যন্ত রাউধার ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মরদেহ কিছুটা ডিকম্পোস্ট (গলিত), কিছুটা সুরক্ষিত অবস্থায় আমরা পেয়েছি। আমরা দেহ পরীক্ষা করে যা পেয়েছি, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তা বিস্তারিত লিখেছি। কিছু সফট টিস্যু, কিছু বোনস (হাড়), কিছু ভিসেরা সংরক্ষণ করেছি। দেহের এক্স-রে করা হয়েছে। এগুলোর প্রতিবেদন এলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এসব পরীক্ষার প্রতিবেদন না আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো মতামত দেব না।’ তিনি বলেন, ‘সফট টিস্যুর বেশির ভাগই গলিত ছিল।’ রাউধার বাবার দাবি অনুযায়ী গলায় অন্য কোনো দাগ ছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেহ অর্ধগলিত ছিল, তাই ওইভাবে কিছু বোঝা যায়নি।’

প্রথম ময়নাতদন্তের সঙ্গে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের কোনো পার্থক্য পেয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখন আমরা কিছু বলতে পারব না। অন্যান্য প্রতিবেদন এলে সবকিছু মিলিয়ে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব। তখন আমরা এ বিষয়ে কথা বলব।’

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজশাহীর হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে রাউধার মরদেহ তোলা হয়। এ সময় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রক্তিম চৌধুরী, সিআইডির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক, রাজশাহী সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. শফি ইকবাল, রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ এবং ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের সুপার মাহমুদা বেগ উপস্থিত ছিলেন।

রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ বলেন, তিনি আশা করছেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের মাধ্যমে রাউধার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হয়ে আসবে। হত্যা মামলাটির তদন্তে এটি সহযোগিতা করবে।

গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রাউধা আথিফের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথম ময়নাতদন্ত শেষে ১ এপ্রিল তাঁকে রাজশাহীর হেতেম খাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরে তাঁর বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।