ভোটকেন্দ্রে ক্যামেরা সক্রিয় বিবেচনায়: নির্বাচন কমিশন

নির্বাচন কমিশন ভবন
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ পর্যবেক্ষণের সুযোগ তৈরি করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন আরও বলছে, তারা একাধিক দিনে ভাগে ভাগে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে।

ইসি রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের এ অবস্থান জানায়। নির্বাচন কমিশন শিক্ষাবিদদের সঙ্গে গত ১৩ মার্চ, নাগরিক সমাজের সঙ্গে ২২ মার্চ, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে ৬ এপ্রিল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে ১৮ এপ্রিল সংলাপ করে। সংলাপের প্রেক্ষাপটে ইসি এ মতামত প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে অংশীজনদের উপস্থাপিত ১৬টি মতামত, পরামর্শ ও প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। আর কমিশন আটটি বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরে।

ইসি বলেছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) শুদ্ধতা ও অপপ্রয়োগ রোধ নিশ্চিত করতে কমিশন ইতিমধ্যে কয়েকটি সভা করেছে। পরীক্ষা ও পর্যালোচনা অব্যাহত আছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অভিজ্ঞ বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে আরও পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হবে। এরপর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বা ব্যবহারের পরিধি ও বিস্তৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইসি আরও জানায়, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলকে অচিরেই সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হবে। ভোটে পেশিশক্তি ও অর্থের প্রভাব প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারচুপি প্রতিরোধ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ ফলাফল নিশ্চিতে সম্ভব সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে কমিশন। ইসির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, অনুমোদিত সাংবাদিক এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অবাধ সুযোগ প্রদান নিশ্চিত করতে কমিশন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।

অবশ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সজাগ দৃষ্টি রেখে ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও ইসি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে তাদের মতামত জানিয়েছে। এ পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখা হবে। এ ছাড়া সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কমিশন যথাযথ করণীয় নির্ধারণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ইসির বিজ্ঞপ্তিতে সংলাপে আসা যেসব মতামত ও পরামর্শ উল্লেখ করেছে, তা হলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, রিটার্নিং অফিসার হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে বা তাদের পাশাপাশি যত দূর সম্ভব কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা বা বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া সমীচীন, ভোটের সময় ভোটকেন্দ্রে অনুমোদিত সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে হবে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে ভোটের সময় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং নির্বাচন যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও কারচুপিমুক্ত হচ্ছে তা দৃশ্যমান হতে হবে।

সংলাপে আসা সুপারিশ ও মতামতের মধ্যে ইসি আরও উল্লেখ করেছে, ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে সম্ভাব্য সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে; প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধ্য করতে হবে; নির্বাচন কমিশনকে গৃহীত শপথের প্রতি অনুগত থেকে সৎ, নিরেপক্ষ ও সাহসী হয়ে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে হবে; নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সংবিধান ও আইনে প্রদত্ত ক্ষমতা সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠে দেশবাসীর নিকট আস্থাভাজন হতে হবে।