সরকারি প্রতিষ্ঠান—৪
বেসরকারি খাত ভালো করছে, ধুঁকছে বিএসইসি
বিএসইসির ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের ১৩টি টিকে আছে। এর মধ্যে আবার ৪টি বন্ধ।
দেশের মোটরসাইকেলের বাজার এখন রমরমা। প্রতিবছর বিক্রি বাড়ছে। কারখানা বাড়ছে। দেশে ২০১৫ সালে যেখানে মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছিল ২ লাখের কম, সেখানে ২০২১ সালে বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখের মতো।
বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোর মোটরসাইকেল বিক্রি যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন সরকারি খাতের মোটরসাইকেল কোম্পানি এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের বিক্রি কমছে। ২০২০–২১ অর্থবছরে এটলাস মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে মাত্র ৮৬৯টি। অবশ্য একসময় মোটরসাইকেলের বাজারে বড় হিস্যা ছিল এটলাসের। ২০১৩–১৪ অর্থবছরেই প্রতিষ্ঠানটি ১৭ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি করেছিল।
সরকারি ক্রয় কমেছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের যে মনোপলি (একচেটিয়া ব্যবসা) ছিল, বেসরকারি খাত সেটা ভেঙে দিয়েছেযুগ্ম সচিব মো. শহীদুল হক ভূঁঞা
এটলাস বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চালু থাকা ৯টি প্রতিষ্ঠানের একটি। যদিও প্রতিষ্ঠানটি লোকসানি। ছয় অর্থবছর ধরে তারা লোকসান দিয়েই যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০২০–২১ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। এটলাসের মতো বিএসইসির মোট চারটি প্রতিষ্ঠান লোকসানি। লাভে আছে পাঁচটি। সার্বিকভাবে বিএসইসির মুনাফা কমছে।
বিএসইসির প্রতিষ্ঠানভেদে লোকসানের পরিমাণে কমবেশি আছে। কারণ মোটামুটি একই। বিএসইসিই বলছে, বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা, যন্ত্রপাতি পুরোনো হয়ে যাওয়া, ব্যয় বেশি হওয়া, যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারা—এসব তাদের লোকসানের বড় কারণ। এদিকে সরকারি যেসব সংস্থা বিএসইসির উৎপাদিত পণ্য বেশি পরিমাণে কিনত, তাদের অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে আরও বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সাত মাস আগে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান যুগ্ম সচিব মো. শহীদুল হক ভূঁঞা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি ক্রয় কমেছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের যে মনোপলি (একচেটিয়া ব্যবসা) ছিল, বেসরকারি খাত সেটা ভেঙে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান এড়াতে আমরা বিপণন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনছি। বেসরকারি খাতের সঙ্গেও আমরা ব্যবসা করব। এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের চেষ্টা করছি।’
বিএসইসির চারটি প্রতিষ্ঠান লোকসানি। এর মধ্যে ২০২০–২১ অর্থবছরে এটলাস বাংলাদেশ ৯ কোটি ৭৯ লাখ, ইস্টার্ন কেব্লস ১০ কোটি, ইস্টার্ন টিউবস ১ কোটি ৭৭ লাখ ও বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিএসইসি প্রতিবছর যে বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করে, তাতে ব্যবসা ও মুনাফা বাড়াতে নানা পরিকল্পনার কথা বলা হয়। কিন্তু অবস্থার তেমন উন্নতি হয় না।
ফিরে দেখা
বাংলাদেশ শিল্প প্রতিষ্ঠান (জাতীয়করণ) অধ্যাদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী বিএসইসি গঠন করা হয়। শুরুতে বাংলাদেশ স্টিল মিলস করপোরেশন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও জাহাজ নির্মাণ করপোরেশনের ৬২টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএসইসির যাত্রা শুরু। ১৯৮৪ সালে যুক্ত হয় বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড, যা ছিল বিএসইসির নিজস্ব উদ্যোগ। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএসইসির ৫০টি প্রতিষ্ঠান বিক্রি ও হস্তান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে বিএসইসির ১৩টি প্রতিষ্ঠানের ৯টি চালু ও ৪টি বন্ধ।
চালু থাকা ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো এটলাস বাংলাদেশ, ন্যাশনাল টিউবস, ইস্টার্ন কেব্লস, ইস্টার্ন টিউবস, গাজী ওয়্যারস, জেনারেল ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি ও ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস। বন্ধ রয়েছে মেহার ইন্ডাস্ট্রিজ, রহিম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ ক্যান কোম্পানি ও বাংলাদেশ স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ।
বিএসইসির কারখানাগুলো মোটরসাইকেল ছাড়াও গাড়ি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি, টিউবলাইট, ব্লেডসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে প্রতিটি পণ্যের বাজার রয়েছে। বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন এসব পণ্য উৎপাদন করে, তেমনি আমদানি করেও চাহিদা মেটানো হয়। তবে বিএসইসি বহু বছর ধরে বাজারে থাকলেও নিজেদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা, বিপণনকৌশল ও দক্ষতা তৈরি করতে পারেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভ–লোকসানের দায় মালিকের। লোকসান হলে মালিককে পকেট থেকে শ্রমিক–কর্মচারীর বেতন দিতে হয়। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সেটিকে দিনে আট ঘণ্টার চাকরি হিসেবে নেন। লাভ–লোকসানের কোনো দায় তাঁদের নেই।
লোকসানে যেসব প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা–২০২১ অনুযায়ী, বিএসইসি ২০২০–২১ অর্থবছরে প্রায় ৭২৯ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। মুনাফার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে বেশি। অবশ্য বিগত অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা কমছে। ২০১৫–১৬ অর্থবছরেও প্রায় ৬০ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল বিএসইসি।
বিএসইসির চারটি প্রতিষ্ঠান লোকসানি। এর মধ্যে ২০২০–২১ অর্থবছরে এটলাস বাংলাদেশ ৯ কোটি ৭৯ লাখ, ইস্টার্ন কেব্লস ১০ কোটি, ইস্টার্ন টিউবস ১ কোটি ৭৭ লাখ ও বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।
২০২০–২১ অর্থবছর পর্যন্ত সাত অর্থবছরের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ পুরো সময় লোকসান দিয়েছে বিএসইসির তিন প্রতিষ্ঠান—ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড, এটলাস বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড।
এর মধ্যে ইস্টার্ন টিউবস বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি ও টিউবলাইট উৎপাদন করে। ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেডের ফ্লোরোসেন্ট টিউবলাইটের সরবরাহ বাজারে রয়েছে। কারওয়ান বাজারের তিনটি বাতির দোকানের বিক্রেতারা জানান, ইস্টার্নের টিউবলাইট অতীতে বেশি বিক্রি হতো। এলইডি টিউবলাইট বাজারে আসায় এখন আর ইস্টার্নের সাধারণ টিউবলাইটের কদর নেই। কারওয়ান বাজারের মেসার্স জামাল ইলেকট্রনিক স্টোরের বিক্রয়কর্মী আবদুল আজিম বলেন, এলইডি টিউবলাইট যদি ১০টি বিক্রি হয়, তাহলে ইস্টার্নের পুরোনো প্রযুক্তির টিউবলাইট বিক্রি হয় একটি। তা–ও মাঝেমধ্যে।
বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি উৎপাদন করে সোর্ড ব্র্যান্ডের ব্লেড। সাত বছর ধরে লোকসানে থাকার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের কারখানা অর্ধেক ভেঙে ফেলা হয়েছে। উৎপাদন নামে মাত্র চালু আছে। নতুন কারখানা উৎপাদনে যেতে পারে ২০২৩ সালে। এর আগে লাভের সম্ভাবনা নেই।
সোর্ড ব্র্যান্ডের একেকটি ব্লেডের নির্ধারিত দাম দুই টাকা। ঢাকার কয়েকটি এলাকায় মুদি ও নরসুন্দরের দোকান ঘুরে সোর্ড ব্লেড পাওয়া যায়নি। কাঁঠালবাগান এলাকার নরসুন্দর শ্যামল কুমার শীল তিন দশক ধরে এ পেশায় নিয়োজিত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একসময় সোর্ড ব্লেডের ব্যাপক মার্কেট (চাহিদা অর্থে) ছিল। মালও ভালো ছিল। কিন্তু এখন নেই। মার্কেটেই নেই। না থাকলে কীভাবে ব্যবহার করব।’
বিএসইসির প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে লোকসান দিয়েছে ইস্টার্ন কেব্লস। বৈদ্যুতিক তার উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠান ২০১৮–১৯ অর্থবছর থেকে লোকসান দিচ্ছে। শেষ তিন অর্থবছরেই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। ইস্টার্ন কেব্লসের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের প্রধান ক্রেতা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) মতো সরকারি বিদ্যুৎ বিপণন কোম্পানিগুলো। এসব প্রতিষ্ঠান গত দুই-তিন বছর ইস্টার্ন কেব্লসের তার কিনছে না। উন্মুক্ত দরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যে দাম প্রস্তাব করে, সেই দরে ইস্টার্ন কেব্লস কাঁচামালও কিনতে পারে না।
কারওয়ান বাজারে বিএসইসির প্রধান কার্যালয়ের কাছেই বৈদ্যুতিক পণ্যের বিপণিবিতান। সেখানে ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে ইস্টার্নের তার নেই। চারটি দোকানের বিক্রয়কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ইস্টার্নের তারের মান ভালো। উজ্জ্বল ইলেকট্রনিক্যাল হাউসের সহকারী ব্যবস্থাপক ইমদাদুল হক বলেন, ইস্টার্নের তারের প্রচার নেই। সে জন্য ক্রেতারা এর খবর জানেন না।
মুনাফায় যেসব প্রতিষ্ঠান
বিএসইসির পাঁচটি প্রতিষ্ঠান মুনাফায় রয়েছে। ২০২০–২১ অর্থবছরে ন্যাশনাল টিউবস ৫১ লাখ, গাজী ওয়্যারস ২ কোটি ৫৪ লাখ, জেনারেল ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ৪ কোটি ৭০ লাখ, ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস ১ কোটি ৪২ লাখ এবং প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা মুনাফা করেছে।
সর্বশেষ সাত অর্থবছরে কখনো লোকসানে পড়েনি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ ও গাজী ওয়্যারস। প্রগতি গাড়ি সংযোজন করে। আর গাজী ওয়্যারস তামার তার উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ক্রেতা কমেছে।
জেনারেল ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ট্রান্সমিটার, তারসহ বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদন করে। পাঁচ অর্থবছর টানা লোকসানে থাকার পর গত দুই বছর মুনাফা করছে কারখানাটি। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য কেনার পরিমাণ বাড়ানোয় মুনাফার দেখা মিলেছে।
পাইপ উৎপাদনকারী ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড শেষ দুই অর্থবছরে মুনাফা করেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ক্রেতা বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) অধীন গ্যাস কোম্পানিগুলো। দেশে একমাত্র ন্যাশনাল টিউবসই এ পাইপ উৎপাদন করায় তাদের কাছ থেকেই কিনতে হয় পেট্রোবাংলাকে। কারখানাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, সরকার গ্যাস–সংযোগ সীমিত করায় লোকসানে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে গৃহস্থালি ও অন্যান্য জায়গায়ও এ পাইপের ব্যবহার আছে। এতে বিক্রি বেড়েছে, লাভে ফিরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৯৩ সালে বন্ধ করে দেওয়া ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস প্রায় ২৫ বছর পর ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আবার চালু করা হয়। কর্মকর্তারা বলেন, সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে রড সরবরাহ করা তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। গত অর্থবছরে লাভে ফিরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বন্ধ প্রতিষ্ঠানের চিত্র
সরকারের নথিতে বিএসইসির অধীনে বর্তমানে চারটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। তার একটি মেহার ইন্ডাস্ট্রিজ। তবে বর্তমানে এর কোনো অস্তিত্ব নেই।
বিএসইসির আরেকটি বন্ধ প্রতিষ্ঠান ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকার রহিম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। এর এক পাশে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি সুতার কারখানা গড়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও বিপণিবিতান।
রহিম মেটালের জমিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান মো. শহীদুল হক ভূঁঞা প্রথম আলোকে বলেন, বিস্তারিত তাঁর জানা নেই। রহিম মেটালের জমির যেটুকু দলিল আছে, সেটুকু বিএসইসির দখলে আছে।
চট্টগ্রামে অবস্থিত বিএসইসির মালিকানাধীন বাংলাদেশ ক্যান কোম্পানি চলে গেছে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের নিয়ন্ত্রণে। হাতিরঝিলে অবস্থিত বাংলাদেশ স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানাটি অলস পড়ে আছে।
‘রুগ্ণ প্রতিষ্ঠান কত দিন’
বিএসইসির ২০১৮–১৯ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের হিসাব পাওয়া যায়। দেখা যায়, তাদের মোট কর্মকর্তা ৩৭৭ ও কর্মচারী ৪৬৭ জন, মোট ৮৪৪ জন। শ্রমিকের সংখ্যা এর চেয়ে দুজন কম, ৮৪২ জন।
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন মনে করেন, অনেক ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান আরেকটি সরকারি সংস্থার পণ্য কিনে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, পণ্যগুলো বাজারে প্রতিযোগিতার উপযোগী নয়। সরকার নিজের রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানকে কত দিন সহযোগিতা দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে সরকারকেও ভাবতে হবে।
বন্ধ কারখানার বিষয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, যে দেশে জমির অভাবে নতুন ব্যবসা শুরু করা সবচেয়ে কঠিন, সে দেশে জমি দখল করে সরকারি করপোরেশনের কারখানা বছরের পর বছর বন্ধ রাখার চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি কী হতে পারে!