বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আর নেই
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব দেখিয়ে বীর উত্তম খেতাব পাওয়া সেই ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ আর নেই। ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সোমবার সকাল ১১টায় মারা যান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১। মধ্যরাত। প্রথমবারের মতো একযোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধবিমান নিয়ে চট্টগ্রামে জ্বালানি তেলের ডিপোতে আক্রমণ করেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম ও ক্যাপ্টেন আকরাম। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব দেখিয়ে বীর উত্তম খেতাব পাওয়া সেই ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ আর নেই।
ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সোমবার সকাল ১১টায় মারা যান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। নিউমোনিয়ায় ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পর সোমবার ‘হার্ট অ্যাটাকে’ তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি স্ত্রী, এক কন্যা ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।
ক্যাপ্টেন আকরামের মৃত্যুর খবর প্রথম আলোকে জানান তাঁর ঘনিষ্ঠজন আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম। স্মৃতিকাতর হয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে প্রথম হামলার পর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা আরও কয়েকটি হামলা চালিয়েছিলেন আকরাম।
ক্যাপ্টেন আকরামের আরেক সহযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে। এর আগে বেলা দেড়টায় ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী।
স্বাধীনতাযুদ্ধে শত্রুসেনা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ক্ষতিসাধনে যে ৯ জন পাইলট ব্যাপক অবদান রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আকরাম আহমেদ। যুদ্ধ শেষে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইনসের ককপিট পাইলট হিসেবে যোগ দেন তিনি। এরপর ট্রেনিং ক্যাপ্টেন, চিফ অব ট্রেনিং ছিলেন। বিমানবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
ক্যাপ্টেন আকরামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এক বিবৃতিতে জাদুঘরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১৭ সালে ষোড়শ বার্ষিক মুক্তির উৎসবে ক্যাপ্টেন আকরাম শিক্ষার্থীদের শপথ পাঠ করান। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বীর সেনানীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।