বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে 'শিক্ষার্থীদের ই-সচেতনতা' বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে সুরক্ষিত পদচারণের জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা। এ জন্য ডিনেট, আইসিটি ডিভিশনসহ বিভিন্ন অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে সুরক্ষিত থাকার লক্ষ্যে একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে।
গাইডলাইনটিকে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ডিনেট কার্যালয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ‘শিক্ষার্থীদের জন্য ই-সচেতনতা’ বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সচেতনতা, নানা ধরনের বিষয় সম্পর্কে সতর্কতা এবং সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য গাইডলাইনটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করা হয়। আলোচনার মূল বিষয় ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটে সচেতনতাবিষয়ক একটি গাইডলাইন চূড়ান্ত করা। গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের বিভিন্ন ধরনের অপশক্তি ও বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার বিভিন্ন বিষয় সমন্বয় করা হয়েছে।
সভায় আইসিটি ডিভিশনের যুগ্ম সচিব সেলিনা পারভেজ বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে যে পরিমাণ জোর দেওয়া হয়, তার থেকে অনেক কম কাজ করা হয় সচেতনতা নিয়ে। সেই হিসেবে ডিনেটের এই উদ্যোগ সত্যই প্রশংসনীয়, তবে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে যোগ করা গেলে আরও ভালো হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ডিনেট শিক্ষার্থীদের জন্য যে গাইডলাইন তৈরি করেছে, সেটি ইন্টারনেট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আরও সচেতন করে তুলতে পারবে। কিন্তু এই শুভ প্রচেষ্টা থেকে দীর্ঘস্থায়ী ফল পেতে অবশ্যই সরকারের বিভিন্ন শাখা ও বিশেষজ্ঞদের এতে যুক্ত করতে হবে।
ইউএসএআইডির সুশাসন ও সিভিই উপদেষ্টা রুমানা আমিন বলেন, ‘সহিংস উগ্রবাদের গ্রুপ বর্তমানে ইন্টারনেট থেকে তাদের সদস্য খোঁজে। সাইবার জগতে নতুন এই বিপদকে মোকাবিলার জন্য আমরা ডিনেটের সঙ্গে একত্রে কাজ করছি।’
ডিনেট, ইউএসএআইডির অবিরোধ: সহনশীলতার পথে কর্মসূচির সহযোগিতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ই-সচেতনতা’ বিষয়ে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডিনেট শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য নিম্নলিখিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করছে:
*নবীন শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে সুরক্ষিত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ের ওপর একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করছে।
*ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী জেলার ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারবিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।
*শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে অনলাইনে একটি ই-শিখন ওয়েব পোর্টাল/প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করেছে।
*শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য একটি ২০ সিরিজের ইন্টারনেট কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
*প্রশিক্ষণ ও কুইজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ে একটি অলিম্পিয়াড আয়োজন করবে।
সভায় অংশগ্রহণ করেন আইসিটি ডিভিশন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ব্র্যাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, সমকাল, গুগল ডেভেলপার গ্রুপ ক্লাউড বাংলা, গণসাক্ষরতা অভিযান, ঢাকা ট্রিবিউন এবং প্রথম আলো ডট কম থেকে প্রতিনিধিরা। ইউএসএআইডির প্রতিনিধি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন রুমানা আমিন ও জেরম সাইয়ার। বিষয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন আইসিটি ডিভিশনের যুগ্ম সচিব সেলিনা পারভেজ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলী, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিক্ষক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, প্রথম আলোর হেড অব বিজনেস জাবেদ সুলতান পিয়াস, ডিনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম সিরাজুল হোসেনসহ আরও অনেকে। বিজ্ঞপ্তি