বিজয়ের মাসে বীরনিবাস পেলেন নয় মুক্তিযোদ্ধা
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ফাতেমা বেগম। আবাদি জমি দূরের কথা, মাথা গোঁজার ভিটাও ছিল না তাঁর। প্রয়াত সাংসদ শওকত মোমেন শাহজাহান তাঁকে কিছু খাসজমির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি এবার পেলেন ‘বীরনিবাস’।
উপজেলার বহেড়াতৈল গ্রামের এ বাসিন্দা এত দিন খাসজমিতে টিনের ঘর তুলে বাস করে আসছিলেন। তবে গত সপ্তাহে সরকারি অর্থায়নে বহেড়াতৈল বাজারের পাশে তৈরি ওই পাকা বাড়িতে ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে উঠেছেন তিনি। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন ফাতেমা। বলেন, ‘আমার থাকার জায়গাও ছিল না। এমপি সাব (প্রয়াত সাংসদ শওকত মোমেন) আমাকে কিছু জমি দিয়েছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী পাকা বাড়ি দিলেন। এমন বাড়ি পাব, আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি।’
ফাতেমাসহ সখীপুরের নয়জন ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা নয়টি বীরনিবাস পেয়েছেন। অন্যরা হলেন উপজেলার তক্তারচালা গ্রামের মহাদেব সরকার, বাঘেরবাড়ি গ্রামের আবদুল মান্নান, কালমেঘা গ্রামের নঈমউদ্দিন, আমতৈল গ্রামের মতিয়ার রহমান, ঘোনারচালা গ্রামের আফছার উদ্দিন, নলুয়া গ্রামের জিয়ারত হোসেন, সখীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নূর মোহাম্মদ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন খান। পাকা বাড়ি পেয়ে তাঁরা যারপরনাই খুশি।
ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাড়িগুলো নির্মাণ করে দিয়েছে।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ আল কুদ্দুছ বলেন, লাল-সবুজের রঙে রাঙানো বাড়িগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে বীরনিবাস। ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি বাড়িতে দুটি শোয়ার কক্ষ, একটি বসার কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও একটি বারান্দা রয়েছে। এ ছাড়া বাড়ির বাইরের দিকে রান্নাঘর-সংলগ্ন একটি পাকা উঠোন, নলকূপ, শৌচাগার ও গৃহপালিত পশুপাখির বাসস্থান রয়েছে।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দুটি ও ২০১৫-১৬ সাতটি বীরনিবাস তৈরির কাজ শুরু হয়। এ জন্য ৭২ লাখ ২১ হাজার ৫৭০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রত্যেকের জন্য নিজ নিজ এলাকায় পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়। টুকটাক কাজ বাকি থাকলেও চলতি মাসের শুরুতে ওই নয়জন মুক্তিযোদ্ধা অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ বাড়িতে উঠে পড়েন।