‘সারা দেশে নৌকার জোয়ার উঠেছে। সেই জোয়ারের কারণেই মহাজোটের প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে যাচ্ছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটা ’৭৫–এর পরে সামরিক শাসন মদদপুষ্ট সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী বিএনপির রাজনীতির ধারার অবসানের সূচনা ঘটাল।’
রোববার রাত আটটায় প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তথ্যমন্ত্রী ও কুষ্টিয়া–২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের মহাজোটের প্রার্থী হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ইনু বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে বিএনপি–জামায়াত অভিযোগের ফিরিস্তি তুলতে থাকে। তারা মুখ রক্ষার জন্য এসব অভিযোগ তোলে। কিছু সহিংস ঘটনা ঘটেছে, যা বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ছাড়া সারা দেশে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হয়েছে। ভোট গ্রহণের চারটা পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট ভোট বর্জন করেনি, মাঠও ত্যাগ করেনি। সবাই মিলে ভোটটা সমাপ্ত করেছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ে ভোটের ব্যবধান এত হওয়ার কারণ হিসেবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত, শেখ হাসিনার শান্তি ও উন্নয়নের রাজনীতির বিপক্ষে বিএনপি–জামায়াতের জঙ্গি, সন্ত্রাসী, খুনির সঙ্গে পার্টনারশিপ করে অশান্তির ভুল রাজনীতি অনুসরণ করা। দ্বিতীয়ত, মাঠপর্যায়ের বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের ওপরের নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ আলগা হয়ে যাওয়া। নেতৃত্ব দুর্বল ও মনোনয়ন–বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং কর্মীদের অনাস্থা। তৃতীয়ত, তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী–সমর্থকেরা পক্ষ পরিবর্তন করে উন্নয়ন ও শান্তি এবং স্বাধীনতার পক্ষ নিয়েছেন। এ কারণেই ভোটের ব্যবধান বেড়ে গেছে।
শেষ কথা হিসেবে ইনু বলেন, সোয়া দুই কোটি নতুন ভোটার সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ নিয়েছে। এ কারণেই গণজোয়ার।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ সরকারের প্রভাবশালী এ মন্ত্রী বলেন, ‘৭০ সালের নির্বাচনের সময় মুসলিম লীগের নেতৃত্ব তাঁর কর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ফলে মাঠপর্যায়ে নৌকার পক্ষ নেয়, নৌকার বিপুল বিজয় এনে দেয় এবং মুসলিম লীগ যুগের অবসান ঘটে সত্তরের নির্বাচনে।’
কুষ্টিয়ার চার আসনে বেসরকারিভাবে পাওয়া প্রাপ্ত ফল
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে আওয়ামী লীগের আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশা (নৌকা) ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রেজা আহাম্মেদ বাচ্চু মোল্লা (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৮ ভোট।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মহাজোটের হাসানুল হক ইনু (নৌকা) ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহসান হাবীব লিংকন (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৭৭৪ ভোট।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসেন আওয়ামী লীগের মাহবুব উল আলম হানিফ (নৌকা) ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির জাকির হোসেন সরকার (ধানের শীষ) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩৭৯ ভোট।
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে আওয়াম লীগের সেলিম আলতাফ জর্জ (নৌকা) ২ লাখ ৭৯ হাজার ১১ পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী (ধানের শীষ) পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৯২ ভোট।