বিএনপির বিপর্যয় নিজেদের কারণে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির বিপর্যয় হয়েছে তাদের নিজেদের কারণে। তারা জনগণের বিষয়গুলোকে সামনে আনতে পারেনি। জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। যখন কোনো দল যখন জনগণের স্বার্থে রাজনীতি না করে নিজেদের স্বার্থে করে, তখন তারা তো জনগণের সমর্থন পেতে পারে না।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ডিআরইউ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংবাদপত্রে একজন প্রতিবেদকের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁদের অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করতে হয়। দেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের গণমাধ্যম স্বাধীন, সবাই স্বাধীনভাবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব। তথ্যমন্ত্রী কাজ করতে সাংবাদিকদের সহায়তা চান।
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির গত ১০ বছরের আন্দোলন ছিল তারেক জিয়ার মামলা থেকে অব্যাহতি, তাঁকে দেশে ফেরত আনা, নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন দাবিতে। এগুলো নিয়েই তাদের রাজনীতি। এগুলো তো সাধারণ জনগণের বিষয় নয়। এই নিয়ে তাদের সব আন্দোলন। এগুলো আদায় করতে গিয়ে তারা জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, বাস-ট্রাকচালকদের, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করেছে। এভাবে জনগণের ওপর হামলা করে ত্রাস সৃষ্টি করা যায়, জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
বিএনপির দলের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিতে দলের মধ্যে একে অপরকে বিশ্বাস করে না। তারা জনগণের বিষয়গুলোকে সামনে আনতে পারেনি। জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে ২০১৪ সালে নির্বাচনে না আসা। এসব কারণে তাদের পরাজয় হয়েছে। আমরা চাই দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাক। কোনো দল যদি নিজেরা নিজেদের পায়ে না দাঁড়ায়, তাহলে তাদের তো অন্য কেউ দাঁড় করিয়ে দিতে পারে না।’
সাগর-রুনির হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ উঠলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন তিনি। তবে এ জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। ডিজিটাল আইনের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই আইন কেবল সাংবাদিকদের জন্য নয়, এটি দেশের সব মানুষের জন্য করা হয়েছে। সাংবাদিকদের যেসব উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা আছে, সেগুলো দূর করার জন্য আমি কাজ করব।’
দেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোকে আরও আধুনিক ও দর্শকপ্রিয় করার জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন সরকার গঠন হয়েছে। আগের কমিটিতে অনেকেই নেই। তাই নতুন করে কমিটি গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া এতে টেলিভিশনের সাংবাদিকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকার কাজ করছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরইউর সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। হাছান মাহমুদের জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান।