বাসা থেকে সংগ্রহ করা করোনা পরীক্ষার নমুনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাত না জেকেজি হেলথ কেয়ার। সংগৃহীত নমুনা ড্রেনে ও ওয়াশ রুমে ফেলে তা নষ্ট করে ফেলা হতো। ওভাল গ্রুপের চিফ ভিজ্যুয়ালাইজার হুমায়ূন কবীর গত ২৪ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে এ কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ওভাল গ্রুপের মালিক ও সিইও আরিফুল ইসলাম চৌধুরী গত ২৬ মার্চ রাতে হুমায়ূন কবীরকে অফিসে ডেকে নেন এবং তাঁকে পিপিই ডিজাইন করতে বলেন। আরিফুল ইসলাম চৌধুরীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য ৫ হাজার টাকা ও বিদেশিদের জন্য ১০০ ডলার নেওয়া হয়। হুমায়ূন জানান, নমুনা সংগ্রহ করার পর তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে না পাঠিয়ে নিজেরাই ড্রেনে বা ওয়াশ রুমে ফেলে নষ্ট করে ফেলতেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ুন কবীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সুস্থ হওয়ার পর আরিফুল ইসলাম তাঁকে বাসায় বসে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাতে বলেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ুন কবীরের স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীও জেকেজিতে কাজ করতেন। তিনিও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং ভুয়া করোনা রিপোর্ট তৈরির কথা স্বীকার করেছেন। তানজিনা পাটোয়ারী সেন্ট্রাল হসপিটাল নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতেন। তানজিনা গত ৪ জুন জেকেজি থেকে পদত্যাগ করেন এবং ১৪ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত বাসায় বসে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। করোনা নমুনা সংগ্রহ ও রিপোর্ট তৈরির কাজে সমন্বয় করতেন মাসুম বিল্লাহ, তানিয়া ও রিদিতা নামের তিন জন ব্যক্তি।
তানজিনা তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, তিনি করোনা ক্যাম্পে ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে ছিলেন। নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে ট্রেনিং দিতেন তিনি। তাঁর কাজ ছিল, নমুনা সংগ্রহের বুথ পরিদর্শন করা এবং সংগৃহীত নমুনাগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো।
হুমায়ূন কবীর ও তানজিনা পাটোয়ারীকে ২৩ জুন আটক করা হয়। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে আটক আছেন।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জোবেদা খাতুন হেলথ (জেকেজি) কাজ শুরু করেছিল ২০১৫ সালে। এ ঘটনায় জেকেজির চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওভাল গ্রুপের মালিক ও সিইও আরিফুল ইসলাম চৌধুরী এখন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক আছেন।