বাজারে স্বস্তি এসেছে, কোনো সমস্যা নেই: কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

বুধবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা
ছবি: প্রথম আলো

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বেকায়দায় স্বল্প আয়ের মানুষ। প্রতিদিন ন্যায্যমূল্যের পণ্য কিনতে টিসিবির ট্রাকের সামনে ভিড় বাড়ছে। এর মধ্যে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আ. গাফ্‌ফার খান বললেন, বাজারে স্বস্তি এসেছে। মানুষ পণ্য কিনতে পারছে।

রোজায় অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখা এবং দাম স্থিতিশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা নিয়ে বুধবার রাজধানীর খামারবাড়িতে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে সভাপতির বক্তব্যে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেছেন, বাজার এখন অনেক ভালো আছে। বাজারে কোনো সমস্যা নেই। বাজার যেন হাসছে। বাজারে প্রচুর জিনিস এখন আছে। কোনো জিনিসের ঘাটতি নেই।

সভায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা এবং সুপারশপগুলোর পরিচালন কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আ. গাফ্‌ফার খান বলেন, ইতিমধ্যে সরকার কিছু কিছু পণ্যের শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়েছে। এর ফলাফল এখনই পাওয়া শুরু হয়েছে। সয়াবিন তেল দেখা যাচ্ছিল না, বাজারে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। এখন প্রচুর সয়াবিন তেল বাজারে আছে। অন্যান্য পণ্যের দামও কমে আসছে। আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে পণ্যের প্রচুর মজুত আছে। অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য না থাকলে পণ্যের দাম স্থিতিশীলতা থাকবে, এখনকার চেয়ে দাম কমতেও পারে। কিছু কিছু পণ্যের উৎপাদন আরও বাড়বে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আ. গাফ্‌ফার খান
ছবি: সংগৃহীত

আ. গাফ্‌ফার খান বলেন, ‘পণ্যে ভেজাল দেওয়ার অপরাধে বিদেশে অনেক বড় শাস্তি দেওয়া হয়। আমাদের দেশেও অনেক শাস্তি আছে, কিন্তু সেসব সেভাবে প্রয়োগ হয় না। বাজারে মূল্যতালিকা না থাকলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করবেন। বিক্রেতারা চালান বা রসিদ রাখবেন। আপনি যত দিয়ে কিনছেন, এরপর আপনি একটা লাভ ধরে ব্যবসা করবেন।’

সভায় উপস্থিত সুপারশপ স্বপ্নের কর্মকর্তা মাহাদি ফয়সাল তরমুজ কেজিদরে বিক্রির সিদ্ধান্ত দিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে দাবি জানান। জবাবে মহাপরিচালক বলেন, বাজারের নিজস্ব একটা চরিত্র আছে। কোনো বাজারে কেজিদরে, কোনো বাজারে একেকটা ধরে বিক্রি হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাঁরা দেবেন না। এটা নির্ধারণ করবেন ব্যবসায়ীরা।

সভায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মজিবর রহমান অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্য চাল, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম), পরিশোধিত চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুর ও শাকসবজির চাহিদা, উৎপাদন ও মজুতের চিত্র তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, দেশে প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে আমদানি করতে হয় ৬ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন। বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে স্থানীয় উৎপাদন ২ দশমিক শূন্য ৩ লাখ মেট্রিক টন এবং আমদানি প্রায় ১৮ লাখ মেট্রিক টন। পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সাতটি সুপারিশ করা হয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও মজুতকারীদের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে সুপারিশে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রশাসন ও হিসাব বিভাগের পরিচালক মো. দীন ইসলাম।