নতুন বছরের শুরুতেই চাল–ডাল কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাজধানীর খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি চাল ২ থেকে ৩ টাকা এবং মসুর ডাল কেজিতে ৫-১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা বলছেন, পাইকারিতেই চালের দাম কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে। আর মসুর ডাল ধরনভেদে দাম বেড়েছে কেজিতে ৩-৫ টাকা।
মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে খুচরায় চাল বিক্রি করেন বরিশাল রাইস এজেন্সির মালিক ইউসুফ আলী হাওলাদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বিআর-২৮ চাল কিনেছেন প্রতি কেজি ৫১ টাকা দরে। নাজিরশাইলের দাম পড়েছে ৬৪ টাকা ৫০ পয়সা। গত সপ্তাহে কেজিতে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিআর-২৮ চাল এবং ৬৩ টাকা কেজিতে কিনেছিলেন নাজিরশাইল চাল। আজ তাঁর দোকানে মোটা চালের কেজি ৪৬ টাকা, বিআর-২৮ ৫৩ টাকা, মিনিকেট ৬৮ টাকা ও নাজিরশাইল চাল ৭৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।
কৃষি মার্কেট বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা থ্রি-স্টার রাইস এজেন্সির সোহাগ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে ধানের সংকট ও দাম বেশি বলে মিলমালিকেরা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করছেন। মিল থেকেই ৫০ কেজির এক বস্তা চাল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শুধু চাল নয়, দাম বেড়েছে মসুর ডালেরও। কৃষি মার্কেট বাজারে চিকন দানার মসুর ডাল এখন ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোটা দানার মসুর ডালের দাম ৯০ টাকা কেজি। এ বাজারের সুমাইয়া জেনারেল স্টোরের মালিক সিফাত শাহরিয়ার প্রথম আলোকে জানান, তিন দিন আগে গত বুধবার মোটা দানার মসুর ডাল পাইকারিতে ৮৪ টাকা কেজি দরে কিনেছিলেন। আজ কেনা হয়েছে ৮৮ টাকা কেজি। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৪ টাকা।
সিফাত শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের দোকানের ক্রেতারা নিয়মিত। অর্থাৎ যাঁরা প্রতি মাসের বাজার একবারে নেন, এমন অধিকাংশ ক্রেতা এখন মাসের বাজারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। যাঁরা আগে মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার বাজার নিতেন, তাঁরা এখন নিচ্ছেন ৮-১০ হাজার টাকা।’
কারওয়ান বাজারে মাসের বাজার করতে এসেছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সোলাইমান খান। তিনি বলেন, গত মাসে যখন মাসের বাজার করেন, তখন চিকন দানার মসুর ডালের দাম ছিল ১০০ টাকা। আর সেটা এখন ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চাল থেকে শুরু করে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও অনেক চড়া।
কেবল চাল-ডাল নয়, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। তবে সোনালিকা মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন নেই। শনিবার বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ১৭৫-১৮০ টাকা। আর সোনালিকা মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়।
তবে কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। দেশি পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) কিনলে দাম পড়ছে ১৬০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম এখন ৪২ টাকা কেজি। গেল সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৪ টাকা কেজি দরে।
এ ছাড়া চীনা আদা ১০ টাকা কমে ১২০ টাকা কেজি এবং চীনা রসুন ২০ টাকা কমে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। আর পুরোনো আলুর দাম এখন ১৭-১৮ টাকা কেজি। শীত মৌসুমের সবজির দামও কমে এসেছে। বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।