ফেরি যাবে অন্য রুটে
স্বাধীনতার আগে থেকে চালু ছিল আরিচা-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। ১৯৮৭ সাল থেকে মাওয়া-মাঝিঘাট ও চরজানাজাত রুটে ফেরি চালু হয়। পরে পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হলে মাওয়া থেকে শিমুলিয়ায় ঘাট হস্তান্তর করা হয়। এরপর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও মঙ্গল মাঝির ঘাটে লঞ্চ–ফেরি চলাচল করে। প্রতিদিন এই দুটি নৌ রুটে রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাটসহ ১৯ জেলার মানুষ চলাচল করে।
বর্তমানে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ রুটে আটটি এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ২১টি ফেরি চলাচল করছে। এই দুই রুটে মোট ফেরি আছে ২৯টি। পদ্মা সেতু চালুর পর ওই পথে চলাচলরত ফেরি ও লঞ্চের কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সেতু চালুর পর মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের কাঁঠালবাড়ির মধ্যে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটেও ফেরির সংখ্যা কমানো হবে। তখন এই দুই রুট থেকে ফেরি অন্যান্য রুটে সরিয়ে নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র জানায়, সেতু চালু হলেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের ফেরিগুলো থাকবে। ঈদের পর ধীরে ধীরে অন্যত্র সরানো হবে।
বিআইডব্লিউটিসির আওতায় বর্তমানে ছয়টি রুটে ফেরি চলাচল করে। এগুলো হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি, চাঁদপুর-শরীয়তপুর, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও লাহারহাট-ভেদুরিয়া। এর মধ্যে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি, শিমুলিয়া-মাঝির কান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে ফেরিতে গাড়ি পরিবহন সবচেয়ে বেশি।
প্রতিবছর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে চলাচলকারী ফেরি থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আয় হয় বিআইডব্লিউটিসির। পদ্মা সেতু চালু হলে ফেরি থেকে আয় কমে যাবে। তাই আয় ঠিক রাখতে নতুন নতুন রুট চালু করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে চালুর জন্য ১৯টি নতুন ফেরি রুট চিহ্নিত করা হয়েছে। আবার বর্তমানে চালু রুটেও ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রস্তাবিত রুটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ থেকে গাইবান্ধার বালাসী ঘাট, মানিকগঞ্জের আরিচা থেকে পাবনার নরাদহ, পিরোজপুরের বেকুটিয়া থেকে চরখালী, কক্সবাজার থেকে মহেশখালী, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থেকে হিজলা এবং বরগুনা থেকে আমতলী।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থেকে জামালপুর পর্যন্ত ফেরি রুট। নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে ভোলার মনপুরা হয়ে তজুমদ্দীন পর্যন্ত ফেরি দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা আছে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, নতুন ফেরি রুট চালুর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় আছে যমুনা নদীর রৌমারী থেকে চিলমারী নৌ রুট।
এ রুটে ফেরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে। এ ছাড়া আরিচা-খয়েরচর রুটে ফেরি চালু হলে পাবনা ও ঈশ্বরদী থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকার দূরত্ব ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার কমে যাবে।