পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণা চেয়ে রিটের চূড়ান্ত শুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণা চেয়ে করা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানির জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ সোমবার শুনানির এই তারিখ ধার্য করেন।
রিটটি শুনানির জন্য আবেদনকারীর আইনজীবীর আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদালত এই তারিখ ধার্য করেন।
শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগে এই সাংসদের আসন শূন্য ঘোষণা চেয়ে গত বছর ওই রিটটি করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর।
পরে শেখ আওসাফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সোমবার রিটটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য আদালতের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় ২২৭ নম্বর ক্রমিকে ছিল। বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে রুল দ্রুত শুনানির জন্য আদালতে আরজি জানানো হয়। আদালত ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।’
সাংসদ শহিদ বর্তমানে কুয়েতে কারাবন্দী অবস্থায় আছেন। ঘুষ লেনদেনের দায়ে কুয়েতের একটি আদালত তাঁকে সম্প্রতি চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন দেশটির আদালত।
কুয়েতে মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে শহিদ গ্রেপ্তার হলেও গত মাসে তাঁর সাজা হয় দেশটির বিভিন্ন মহলকে ঘুষ দেওয়ার দায়ে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাংসদ বিদেশের মাটিতে ফৌজদারি অপরাধে শাস্তি পেলেন। শহিদ ইসলাম গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক হন। কুয়েতে আটকের সাড়ে সাত মাস আর বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে তিন মাসের মাথায় দণ্ডিত হন তিনি।
এমন প্রেক্ষাপটে শহিদের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না, তা নিয়ে এখন দেশে আলোচনা হচ্ছে।
হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে শহিদের আসনটি শূন্য ঘোষণা চেয়ে গত বছরের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া।
রিটটির প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ আগস্ট হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল দেন। রুল শুনানির জন্য রিটটি ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল। আজ শুনানির দিন ধার্য হলো।
রিট আবেদনকারীর অপর আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কাজী শহিদের আসনটি কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক, সাংসদ শহিদসহ ছয় বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিবাদীদের পক্ষ থেকে রুলের জবাব হাতে আসেনি।
রিটের ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় শহিদ শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর উল্লেখ করেন। অথচ জমা দেন স্নাতক পাসের সনদ। সিয়েরা লিওনের মিলটন মরগাই কলেজ অব এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্স ইন ইকোনমিকস বিষয়ে স্নাতক সনদ জমা দেওয়া হয়। যে বিষয়ের ওপর স্নাতক সনদের কথা বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে সে বিষয়ের কোনো বিভাগ নেই। এমনকি তিনি স্নাতকোত্তরের কোনো সনদ দেননি নির্বাচনী হলফনামায়।