পরীমনির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু, যা বললেন মামলার বাদী
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী ও র্যাব-১–এর ডিএডি মজিবর রহমান। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় ২৯ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন ওই আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মাহাবুব আলম। এপিপি মাহাবুব জানান, মামলার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। দুজন আসামির পক্ষে জেরাও শেষ হয়েছে। তবে পরীমনির পক্ষে জেরা শেষ হয়নি। পরবর্তী শুনানির তারিখে পরীমনির পক্ষে সাক্ষীকে জেরা করবেন তাঁর আইনজীবী। এ মামলায় গত ৫ জানুয়ারি পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার অভিযুক্ত তিন আসামি হলেন পরীমনি, আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেন।
গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে রাজধানীর বনানী থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরীমনির বিরুদ্ধে আদালতে যা বললেন মামলার বাদী
আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে মামলার বাদী র্যাব-১–এর ডিএডি মজিবর রহমান বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট দায়িত্ব পালনের সময় জানতে পারেন, বনানীর লেকভিউ এলাকার বাসায় বিপুল পরিমাণ মাদক মজুত রয়েছে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের নির্দেশনা মোতাবেক বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন। পরীমনির শয়নকক্ষের দেয়ালের কাঠের ফ্রেম থেকে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ৪ গ্রাম আইস ও ১ ব্লট এলএসডি উদ্ধার করেন। পরে বাসা থেকে পরীমনি ও আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করেন। র্যাব-১–এর প্রধান কার্যালয়ে পরীমনি ও আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নজরুল ইসলামের নাম প্রকাশ পায়। পরে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরার জবাবে র্যাবের ডিএডি মজিবর রহমান আদালতে বলেন, সেদিন অভিযান পরিচালনাকালে র্যাবের দুটি দল দায়িত্বে ছিল। একটি দল ইউনিফর্ম পরা ছিল। তাঁর দলের সদস্য ছিলেন পাঁচজন।
পরীমনির বাসায় প্রবেশের আগে সিভিল লোকজন দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। বাসার নিরাপত্তাপ্রহরী তাঁর দেহ তল্লাশি করেন।
পরীমনির বিরুদ্ধে মামলার দুই মাসের মাথায় ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্রে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গত বছরের ১৫ নভেম্বর আমলে নেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ বদলি করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। মামলার দুই আসামি আশরাফুল ও কবিরের মাধ্যমে পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় মজুত রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমনি তাঁর গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।